তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৯ এএম
পৃথিবীর ভূত্বক নানা টেকটনিক প্লেটে ভাগ করা। এসব প্লেট একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, সরে যায় বা নিচে ঢুকে যায়। আর এই নড়াচড়ার ফলেই সৃষ্টি হয় ভূমিকম্প। তাই ভূমিকম্পের ঘটনা কোনো এলাকার সমতল–পাহাড়ি অবস্থানের ওপর সরাসরি নির্ভর করে না, নির্ভর করে এলাকাটি টেকটনিক প্লেটের কোন অংশে রয়েছে।
পাহাড়ি এলাকায় ভূমিকম্প কেন বেশি দেখা যায়?
বিশ্বের অধিকাংশ পাহাড়ই তৈরি হয়েছে প্লেটের সংঘর্ষে। যেমন—হিমালয় তৈরি হয়েছে ভারতীয় ও ইউরেশীয় প্লেটের ধাক্কায়। যেখানে প্লেটগুলোর সংঘর্ষ তীব্র, সেখানে জমে থাকা চাপও বেশি। এই চাপ যখন হঠাৎ মুক্তি পায়, তখন ঘটে বড় ভূমিকম্প।
তাই পাহাড়ি এলাকায় সাধারণত প্লেট বাউন্ডারি বা ফল্ট লাইন বেশি থাকে, যার ফলে ভূমিকম্পও বেশি অনুভূত হয়।
সমতল এলাকায় ভূমিকম্প কম, তবে একেবারে নয়
সমতল এলাকা যেন ভূমিকম্পমুক্ত—এমন ভাবা ভুল। পৃথিবীর প্লেট বাউন্ডারি শুধু পাহাড়ি অঞ্চলেই নয়, সমতল বা উপকূলেও থাকতে পারে। বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চল সমতল হলেও এটি একটি সক্রিয় ফল্ট লাইনের কাছে হওয়ায় ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকে।
তবে পাহাড়ি এলাকার মতো শক্ত সংঘর্ষ এখানে ঘটেনা, তাই বড় ভূমিকম্পের সংখ্যা তুলনামূলক কম।

টেকটনিক অবস্থানের ওপরই ঝুঁকি নির্ভর করে
কোনো সমতল এলাকা যদি টেকটনিক প্লেটের সংযোগস্থলের ওপর থাকে যেমন জাপানের কিছু উপকূল, ইন্দোনেশিয়া বা তুরস্ক—তবে সেখানেও ভূমিকম্প ঘনঘন হয়। আবার কোনো পাহাড়ি অঞ্চল যদি প্লেট বাউন্ডারি থেকে দূরে হয়, সেখানে ভূমিকম্প কম দেখা যায়।
কোন এলাকা বেশি ঝুঁকিতে?
ভূমিকম্পের ঝুঁকি নির্ভর করে—
এলাকাটি প্লেট বাউন্ডারির কতটা কাছে
সেখানে সক্রিয় ফল্ট লাইন আছে কি না
প্লেটের গতির হার কত
অতীতে সেখানে কতবার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে
আরও পড়ুন: শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর টানা কয়েকদিন আফটার শক হতে পারে
পাহাড়ি এলাকায় সাধারণত সংঘর্ষ বেশি হওয়ায় ঝুঁকি বেশি, তবে সমতল এলাকাও ঝুঁকিমুক্ত নয়—বিশেষ করে যেগুলো সক্রিয় ফল্ট লাইনের ওপর।
ভূমিকম্প সমতল বা পাহাড়ি কোন এলাকার ওপর নির্ভর করে না—বরং এলাকার ভূতাত্ত্বিক অবস্থান, প্লেট বাউন্ডারি ও ফল্ট লাইনের উপস্থিতির ওপর নির্ভর করে। তাই পৃথিবীর যে অংশই হোক, ফল্ট লাইনের ওপর থাকলে সেখানেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি সর্বাধিক।
এজেড