তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২২ জুন ২০২৫, ০৯:৫১ এএম
মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট ও ওয়াইফাই আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু অনেকেই লক্ষ্য করেন, টিনের ছাউনি বা টিনশেড ঘরে ঢুকলেই ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল হয়ে পড়ে, কিংবা ওয়াইফাইয়ের সিগন্যাল কমে যায়। অথচ একই জায়গায়, পাশের কংক্রিটের বিল্ডিং বা দালানে নেটওয়ার্ক ভালো চলে। কেন এমন হয়? এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কিছু কারণ।
টিন একটি ধাতব পদার্থ, যেটি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ বা রেডিও সিগন্যাল প্রতিফলিত (রিফ্লেক্ট) ও বাধাগ্রস্ত (ব্লক) করতে পারে। মোবাইল বা ওয়াইফাইয়ের সিগন্যাল মূলত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভের মাধ্যমে কাজ করে। টিনের ছাদ ও দেয়াল এই তরঙ্গগুলোকে আটকে দেয়, ফলে ঘরের ভেতরে পৌঁছাতে পারে না।

টিনশেড ঘর অনেকটা ‘ফ্যারাডে কেজ’-এর মতো কাজ করে। ফ্যারাডে কেজ এমন একটি কাঠামো যা বাইরের ইলেকট্রিক বা রেডিও তরঙ্গকে ভেতরে ঢুকতে দেয় না। ফলে টিনের ঘর পুরোপুরি ঘেরা থাকলে ফোনের টাওয়ারের সিগন্যাল কিংবা ওয়াইফাই রাউটার থেকে আসা তরঙ্গ ভিতরে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
কংক্রিট বিল্ডিং সাধারণত বেশি উঁচু এবং খোলা জায়গায় হয়। ফলে সেগুলো টাওয়ার থেকে আসা সিগন্যাল সহজে ধরতে পারে। কিন্তু টিনের ঘর সাধারণত নিচু হয় এবং আশপাশে অন্যান্য টিনশেড থাকলে সিগন্যাল আরও বাধাপ্রাপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: ফোনে নেটওয়ার্ক না পেলে কী করবেন?
অনেক টিনের ঘরে ওয়াইফাই রাউটার থাকে ঘরের একপ্রান্তে বা ভেতরে। চারপাশে টিন থাকলে সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যায় এবং দূরের কক্ষে পৌঁছাতে পারে না। টিনের দেয়াল ও ছাদ এই তরঙ্গ শোষণ বা প্রতিফলিত করে দেয়।

রাউটার বা ফোন রিসিভার জানালার পাশে বা খোলা জায়গায় রাখা।
রিপিটার বা সিগন্যাল বুস্টার ব্যবহার করা।
টিনের ছাদে ছোট একটি ফাইবার গ্লাস উইন্ডো বা খোলা অংশ রাখা যাতে সিগন্যাল ঢুকতে পারে।
আরও পড়ুন: মোবাইলের নেটওয়ার্ক সমস্যা সমাধানের উপায়
ওয়াইফাই মেশ সিস্টেম ব্যবহার করে ঘরের বিভিন্ন জায়গায় কভারেজ বাড়ানো।
টিনশেড ঘর ফোন ও ওয়াইফাই সিগন্যালের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এর প্রধান কারণ ধাতব টিনের বাধা সৃষ্টি এবং সিগন্যাল প্রতিফলনের বৈজ্ঞানিক প্রভাব। তবে কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান আনা সম্ভব। প্রযুক্তির এই যুগে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা মানেই পিছিয়ে পড়া—তাই সচেতন ব্যবহারকারী হিসেবে আমাদের জানা উচিত কীভাবে এই বাধা দূর করা যায়।
এজেড