তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২২ জুন ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম
ডিএনএ টেস্ট বা ডিএনএ পরীক্ষা হলো একটি জেনেটিক পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির শরীরে থাকা ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) বিশ্লেষণ করে তার পরিচয়, আত্মীয়তা বা উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। এই পরীক্ষাটি বিজ্ঞানের এক অত্যাধুনিক আবিষ্কার, যা বর্তমানে অপরাধ তদন্ত থেকে শুরু করে পারিবারিক সম্পর্কের প্রমাণ, এমনকি নিখোঁজ বা মৃত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
প্রতিটি মানুষের শরীরে থাকা ডিএনএ একধরনের জীববৈজ্ঞানিক ‘পরিচয়পত্র’। ডিএনএ থাকে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে—যেমন চুল, রক্ত, লালা বা ত্বকে। একজন মানুষের ডিএনএর গঠন ৯৯.৯% পর্যন্ত অন্যদের সঙ্গে মিললেও, বাকি ০.১% ভিন্নতা থেকেই নির্দিষ্টভাবে ব্যক্তিগত পরিচয় নির্ধারণ সম্ভব হয়। এই ০.১%-এর বিশ্লেষণ করেই বিজ্ঞানীরা নির্ধারণ করেন কোনো ব্যক্তি কার সঙ্গে জেনেটিকভাবে সম্পর্কিত, কিংবা কোনো অপরাধস্থলে পাওয়া নমুনা কাকে ইঙ্গিত করছে।

অপরাধ তদন্তে: অপরাধস্থলে পাওয়া রক্ত, চুল বা লালা থেকে অপরাধীর পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ ও গোয়েন্দারা ডিএনএ টেস্ট ব্যবহার করে থাকেন। এটি অপরাধীর উপস্থিতির নিশ্চিত প্রমাণ দেয়।
আত্মীয়তার প্রমাণ: সন্তান কার, কিংবা কোনো ব্যক্তির পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ধারণে ডিএনএ পরীক্ষা শতভাগ নির্ভরযোগ্য উপায়।
নিখোঁজ ও মৃতদেহ শনাক্তে: দুর্ঘটনা, যুদ্ধ বা দুর্যোগে অজ্ঞাত বা বিকৃত মৃতদেহ শনাক্তেও ডিএনএ টেস্ট কার্যকর। নিহত ব্যক্তির স্বজনদের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়ায়: আদালতে পিতৃত্ব নির্ধারণ, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত মামলা বা অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রভাব ফেলতে পারে।

কেন ডিএনএ টেস্ট বিশ্বস্ত?
ডিএনএ এমন এক জিনগত কোড যা একজন ব্যক্তির জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একই থাকে। এটি পরিবর্তন হয় না এবং একে কোনোভাবেই জাল করা সম্ভব নয়। তাই পরিচয় বা আত্মীয়তার প্রমাণ হিসেবে এটি বিজ্ঞানভিত্তিক, নির্ভরযোগ্য ও প্রমাণসাপেক্ষ পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত।
আরও পড়ুন: সার্কিট ব্রেকার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয় কেন?
বর্তমান যুগে প্রযুক্তির কল্যাণে ডিএনএ টেস্ট হয়ে উঠেছে মানব পরিচয় নির্ধারণের নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর মাধ্যম। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়কে ফিরে পাওয়া—সবক্ষেত্রেই এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এজেড