তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২০ জুন ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
এখন প্রযুক্তি শিশুর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, ল্যাপটপ কিংবা ইন্টারনেট, এসবের সংস্পর্শে শিশুরা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অনলাইন ক্লাস, কার্টুন দেখা, গেম খেলা, ইউটিউব দেখা, সব কিছুতেই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তবে এই সুযোগের পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের ঝুঁকি। অনুপযুক্ত কনটেন্ট, স্ক্রিন অ্যাডিকশন, সাইবারবুলিং, কিংবা গোপনীয়তার লঙ্ঘনের মতো সমস্যাও বেড়েছে। তাই সময় এসেছে অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার। নিচে কিছু উপায় তুলে ধরা হলো যেভাবে আপনি শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহারকে নিরাপদ রাখতে পারেন-
প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য শিশুদের জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৫ বছরের নিচের শিশুদের জন্য স্ক্রিন টাইম দিনে ১ ঘণ্টার বেশি হওয়া উচিত নয়। বড় শিশুদের জন্যও নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম সীমিত করতে হবে।

শিশুরা কী দেখছে বা পড়ছে, তা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। ইউটিউব কিডস, নেটফ্লিক্স কিডস বা অন্য শিশুদের উপযোগী অ্যাপস ব্যবহার করান। গেম ও ভিডিও বাছাইয়ে পিইজিআই বা ইএসআরবি রেটিং অনুসরণ করুন।
প্রায় সব স্মার্টফোন, ট্যাব বা ল্যাপটপেই প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ফিচার থাকে। এর মাধ্যমে আপনি নির্দিষ্ট অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্লক করতে পারবেন, স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন এবং শিশুর অনলাইন কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

টানা স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা চোখের জন্য ক্ষতিকর। শিশুদের প্রতিদিনের স্ক্রিন টাইমে ২০-৩০ মিনিট পরপর বিরতি নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাদের বাইরে খেলা, বই পড়া কিংবা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে উৎসাহিত করুন।
শিশুকে শেখান কখনোই যেন তারা তাদের নাম, ঠিকানা, স্কুলের নাম, ছবি বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্য অনলাইনে না দেয়। এটি তাদের সাইবার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে।
আপনি যদি সারাক্ষণ ফোন বা ট্যাবলেট নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, তাহলে সন্তানও তাই করবে। নিজের স্ক্রিন টাইমও নিয়ন্ত্রণ করুন এবং একসঙ্গে ‘নো স্ক্রিন টাইম’ পারিবারিক সময় গড়ে তুলুন।

শিশু কী গেম খেলছে, কী ভিডিও দেখছে তা জেনে নিন এবং তার সঙ্গে আলোচনা করুন। এতে শিশু খোলামেলা থাকবে এবং বিপদে পড়লে সহজে আপনার কাছে আসবে।
শুধু নিষেধ বা নিয়ন্ত্রণ না করে, শিশুদের সঙ্গে বসে মজার শিক্ষামূলক ভিডিও দেখুন, গুগল আর্টস, ডুডল গেমস বা বিজ্ঞানভিত্তিক অ্যাপ ব্যবহার করে তাদের আগ্রহী করে তুলুন। এতে তারা প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে ইতিবাচকভাবে।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে থাকছে না ভিডিও, থাকবে শুধু রিলস
প্রযুক্তিকে পুরোপুরি বাদ দেওয়া সম্ভব নয়, বরং শিশুদের সঙ্গে সময় নিয়ে এর নিরাপদ ব্যবহার শেখানোই বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ। সচেতন অভিভাবক হিসেবে আপনি যদি সময় দেন, গাইড করেন এবং শিশুদের বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠেন—তবে প্রযুক্তি তাদের জন্য হবে শেখার দরজা, ক্ষতির নয়।
এজেড