তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১৫ জুন ২০২৫, ১০:০০ এএম
যুদ্ধ মানেই কৌশল, বুদ্ধিমত্তা এবং আত্মরক্ষার লড়াই। প্রতিপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে টিকে থাকা কিংবা আক্রমণ চালানো একেকটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল— ক্যামোফ্লেজ। এটি এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে সৈনিক, যানবাহন কিংবা অস্ত্র নিজেকে আশপাশের পরিবেশের সঙ্গে মিলিয়ে লুকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়।
‘ক্যামোফ্লেজ’ (Camouflage) শব্দের অর্থই হলো ‘লুকানো’ বা ‘আত্মগোপন করা’। এটি এমন এক কৌশল, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তু নিজেকে চারপাশের পরিবেশের রঙ, টেক্সচার বা আলো-আঁধারির সঙ্গে মিলিয়ে ফেলে যেন শত্রু তাকে সহজে দেখতে না পায়।

সৈনিকদের ইউনিফর্ম এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যাতে জঙ্গল, মরুভূমি বা বরফের মাঠে তারা সহজেই পরিবেশের সঙ্গে মিশে যেতে পারেন।
যেমন-
সবুজ-বাদামি ছোপ ছোপ ডিজাইন জঙ্গলের জন্য
বালির রঙের প্যাটার্ন মরুভূমির জন্য
সাদা-ধূসর ডিজাইন বরফের অঞ্চলের জন্য
যুদ্ধের যানবাহন যেমন ট্যাংক, জিপ, কামান— এসবেও থাকে বিশেষ ক্যামোফ্লেজ রঙ যাতে তারা দূর থেকে সহজে শনাক্ত না হয়।

সৈনিকরা তাদের অবস্থান লুকাতে ক্যামোফ্লেজ নেট, ঘাস, পাতা ইত্যাদি দিয়ে ঢেকে রাখেন যাতে শত্রুপক্ষ ড্রোন বা বিমানের মাধ্যমে দেখতে না পারে।
মাঠযুদ্ধে মুখ ও খোলা অংশে বিশেষ রঙ দিয়ে ক্যামোফ্লেজ করা হয় যাতে রঙিন ত্বক আলোতে ঝলকে না ওঠে।
শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে থাকার সুযোগ দেয়
আক্রমণের আগেই ধরা পড়ার সম্ভাবনা কমায়
গোপন ঘাঁটি ও অস্ত্র সুরক্ষিত রাখা যায়
ড্রোন ও স্যাটেলাইট থেকে শনাক্ত হওয়া কঠিন হয়
অপ্রত্যাশিত আক্রমণ চালানো সহজ হয়

বর্তমানে শুধু রঙ বা কাপড় নয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে ক্যামোফ্লেজে:
থার্মাল ব্ল্যাঙ্কেট যা সৈনিকদের তাপ শনাক্তকরণ থেকে রক্ষা করে
রাডার-প্রতিরোধী প্রলেপ (stealth coating) বিমানে ব্যবহার হয়
ডিজিটাল ক্যামোফ্লেজ যেখানে রঙ ও প্যাটার্ন কম্পিউটারের সাহায্যে সাজানো হয়
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর হেলমেটে রশি বা নেট কেন থাকে?
ক্যামোফ্লেজ শুধু একটা রঙিন পোশাক নয়, বরং এটি এক ধরনের আত্মরক্ষামূলক কৌশল, যা যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের টিকে থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক যুগে এটি আরও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে রূপ নিচ্ছে এক অদৃশ্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়।
এজেড