তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১৫ জুন ২০২৫, ০৯:০৯ এএম
বিশ্বের সামরিক শক্তিগুলো এখন প্রতিযোগিতা করছে দ্রুতগতির, নির্ভুল ও প্রতিরক্ষা ভেদ করতে সক্ষম মিসাইল তৈরিতে। এই প্রতিযোগিতার ফসল ‘হাইপারসনিক মিসাইল’। শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বা তার চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্র আধুনিক যুদ্ধের চেহারা পাল্টে দিচ্ছে। রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় শক্তিগুলো এর উন্নয়ন ও পরীক্ষায় ব্যস্ত।
হাইপারসনিক মিসাইল হলো এমন এক ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র যা শব্দের গতির (Mach 1) চেয়ে কমপক্ষে পাঁচ গুণ (Mach 5) দ্রুত ছুটতে পারে। এরা এতটাই দ্রুত যে প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো অনেক সময় একে শনাক্ত করেও ধ্বংস করতে পারে না।
শব্দের গতি: প্রায় ১,২৩৫ কিমি/ঘণ্টা
হাইপারসনিক গতি: ৬,১৭৪ কিমি/ঘণ্টা বা তার বেশি
উদাহরণস্বরূপ, একটি হাইপারসনিক মিসাইল ১,০০০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে মাত্র ৮-১০ মিনিটে পৌঁছে যেতে পারে।
হাইপারসনিক মিসাইলের প্রকারভেদ

এটি একটি মিসাইলের সাহায্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছে গিয়ে গ্লাইড করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এটি উচ্চ গতি ও ভিন্ন পথে চলায় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিভ্রান্ত হয়।
এই ক্ষেপণাস্ত্র র্যামজেট বা স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন ব্যবহার করে নিজেই গতি ধরে রাখে এবং ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তু অভিমুখে ছুটে চলে।
লঞ্চ প্যাড থেকে উৎক্ষেপণ
উচ্চমাত্রায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ
গ্লাইড বা ক্রুজ মোডে গতি বৃদ্ধি
রাডার ফাঁকি দিয়ে হঠাৎ দিক পরিবর্তন করে (maneuverability)
টার্গেটের ওপর নিখুঁত আঘাত
রাডারে শনাক্ত করা কঠিন
অত্যন্ত দ্রুত গতিসম্পন্ন
নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে
পারমাণবিক বোমা বহনের ক্ষমতা রাখে
বর্তমান মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কার্যত অকার্যকর

রাশিয়া: ‘অ্যাভানগার্ড’ ও ‘কিনজাল’
চীন: ‘DF-17’
যুক্তরাষ্ট্র: পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছে
ভারত: ‘Shaurya’ ও ‘BrahMos-II’ প্রকল্প চলছে
হাইপারসনিক প্রযুক্তি প্রতিরক্ষা ও প্রতিশোধক্ষমতা বাড়ালেও এতে নতুন করে শুরু হয়েছে অস্ত্র প্রতিযোগিতা। প্রতিটি দেশ চাইছে এই প্রযুক্তির উন্নয়নে এগিয়ে থাকতে। তবে এর অপব্যবহার, ভুল শনাক্তকরণ বা পারমাণবিক ঝুঁকির আশঙ্কাও বাড়ছে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর হেলমেটে রশি বা নেট কেন থাকে?
হাইপারসনিক মিসাইল প্রযুক্তি ভবিষ্যতের যুদ্ধকে আরও দ্রুত, ভয়াবহ এবং অপ্রতিরোধ্য করে তুলছে। এই মিসাইল শুধু গতি নয়, বরং আধিপত্যের এক নতুন মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এজেড