তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২০ মে ২০২৫, ১১:৫৩ এএম
ইলন মাস্কের স্পেসএক্স পরিচালিত স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা বিশ্বব্যাপী এক বিপ্লব ঘটাচ্ছে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগের ক্ষেত্রে। বাংলাদেশেও এই সেবা চালু হওয়ার পর থেকে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি কিছু বাস্তবিক সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যা ভোক্তাদের জানাও জরুরি।
স্টারলিংক সেবার প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো এর উচ্চ খরচ। ব্যবহারকারীদের এককালীন প্রায় ৪৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি টার্মিনাল সেট কিনতে হয়। এছাড়া প্রতি মাসে ৪২০০ থেকে ৬০০০ টাকা পর্যন্ত সাবস্ক্রিপশন ফি গুনতে হয়, যা বাংলাদেশের অনেকের জন্য ব্যয়বহুল।
স্যাটেলাইট সিগন্যাল আবহাওয়ার ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। ভারী বৃষ্টি, ঝড়, বজ্রপাত বা মেঘাচ্ছন্ন অবস্থায় সংযোগ দুর্বল হতে পারে, যার ফলে ইন্টারনেটের গতি হ্রাস পায় বা সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
যদিও স্টারলিংক লো-আর্থ অরবিট (লিও) স্যাটেলাইট ব্যবহার করে, তবুও ফাইবার অপটিকের তুলনায় লেটেন্সি (পিং টাইম) কিছুটা বেশি। রিয়েল টাইম গেমিং বা শেয়ার বাজারের ট্রেডিংয়ের মতো দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল কাজের জন্য এটি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
গ্রাহক টার্মিনাল স্থাপনের জন্য খোলা আকাশের নিচে দৃশ্যমানতা থাকা প্রয়োজন, অর্থাৎ বাড়ি বা ভবনের ছাদে বিশেষ ব্যবস্থা করতে হয়। গাছপালা, দালান বা অন্য কোনো বাধা থাকলে সিগন্যাল ঠিকভাবে পাওয়া যায় না।
স্টারলিংকের সেবার জন্য নির্দিষ্ট গ্রাউন্ড স্টেশন ও কক্ষপথ স্যাটেলাইটের উপস্থিতি প্রয়োজন। যদিও তারা দ্রুত বিস্তার ঘটাচ্ছে, এখনো অনেক অঞ্চলে সেবা পুরোপুরি স্থিতিশীল নয়। পাশাপাশি স্থানীয় গ্রাহকসেবা বা টেকনিক্যাল সহায়তা এখনও সীমিত।
যেহেতু ইন্টারনেট ট্র্যাফিক মহাকাশ দিয়ে যাতায়াত করে, তাই অনেকেই গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। যদিও স্টারলিংক এনক্রিপশন ব্যবহার করে, তবুও এটি স্থানীয় সার্ভারভিত্তিক সংযোগের মতো স্বচ্ছ ও নিরাপদ নয় বলে কিছু প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মত দেন।
স্টারলিংক নিঃসন্দেহে গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম। তবে এই প্রযুক্তির কিছু সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ভোক্তাদের উচিত এই প্রযুক্তিকে পূর্ণ সম্ভাবনায় কাজে লাগানোর পাশাপাশি এর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকা।
এজেড