তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
৩০ মে ২০২৪, ০১:২৫ পিএম
সবার হাতে হাতে শোভা পাচ্ছে স্মার্টফোন। বড়দের মতো ছোটরাও এই ফোনে মজেছে। ফলে তাদের পড়াশোনা, বিশ্রাম থেকে শুরু করে প্রত্যাহিক জীবনের ছন্দপতন হচ্ছে। এমনকি শিশুদের স্বাস্থ্যহানির কারণও হয়ে উঠেছে এই মুঠোফোন।
সকালে ঘুম ভাঙার অ্যালার্ম থেকে শুরু হয় মোবাইলের ব্যবহার। শেষ হয় রাতে শুতে যাওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং দিয়ে। এইভাবে আমাদের দিনের অধিকাংশ সময়ই কেটে যায় মোবাইল হাতে। আমাদের দেখাদেখি বাড়ির ছোটরাও শেখে মোবাইলের ব্যবহার। তাছাড়া এখন নানা অনলাইন কোর্সের সুবাদে সন্তানদের কাছে মোবাইল, ট্যাব থাকা বড় কোনও বিষয় নয়।
আরও পড়ুন: শিশু-কিশোরদের মোবাইল ফোনের নেশা দূর করার উপায়
হাতে মোবাইল, ট্যাব পেয়ে তার অপব্যবহার করতে ভোলে না অনেকেই। কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলে তো কেউ আবার বিভিন্ন অনলাইন গেমসে নষ্ট করে সময়। এইভাবে ধীরে ধীরে মোবাইল, ট্যাবলেটে আসক্ত হয়ে পড়ে সন্তান। এর কারণে পড়াশোনায় তো ক্ষতি হয়ই, সঙ্গে স্বাস্থ্যেও পড়ে প্রভাব। তাই সময় থাকতে এই বিষয়ে সচেতন হন।

অত্যাধিক স্মার্টফোন ব্যবহারে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে
মোবাইল থেকে ক্রমাগত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন হয়ে থাকে। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আমাদের মস্তিষ্ক ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনের প্রতি সংবেদনশীল। তাই দীর্ঘ সময় ধরে ফোন ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমতে পারেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এমনকি কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে বেশি সময় মোবাইল ব্যবহারের কারণে টিউমার পর্যন্ত হতে পারে। তবে এই নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন থাকলেও বাবা-মায়েদের আগে থাকতেই সাবধান হতে ক্ষতি কী?
চোখেও পড়ে প্রভাব
এখন সন্তানরা হাতে মোবাইল পেলেই সারাদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করছে, ওয়েব সিরিজ দেখছে। নয়তো আঙুল চলছে কোনও অনলাইন গেমসে। অর্থাৎ দিনের বেশিরভাগ সময় চোখ আটকে রয়েছে মোবাইলের স্ক্রিনে। বাবা-মায়েরা জেনে রাখুন সারাদিন মোবাইল ঘাটার কারণে কিন্তু সন্তানের চোখেরও ক্ষতি হচ্ছে। এর জন্য অল্প বয়সেই আপনার সন্তানের চোখে উঠতে পারে ভারী কাচের চশমা। তাই সন্তানের মোবাইলের নেশা ছাড়ান শিগগির।

বারোটা বাজছে ঘুমের
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করে বহু সন্তান। মোবাইল স্ক্রিনের এই আলো মস্তিষ্কে বার্তা পাঠায়। আর ঘুম আসার জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন ক্ষরণে বাধা দেয়। ফলে রাতের ঘুম ওড়ে সন্তানের। এদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমের অভাবে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়। মেজাজ থাকে সপ্তমে। মাথাব্যথা তো সঙ্গী হয়ই। পাশাপাশি স্বাস্থ্যেও ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
পড়াশোনায় হচ্ছে ক্ষতি
মোবাইলের নেশা কিন্তু আপনার সন্তানকে শিক্ষার দিক থেকেও পেছনে ফেলে দিতে পারে। দিনের বেশিরভাগ সময় ফোন নিয়েই যদি কাটায় তাহলে পড়াশোনা করবে কখন? ফলে পরীক্ষার ফলাফলেও তার প্রতিফলন ঘটে। সকলের থেকে পিছিয়ে পড়ে আপনার সন্তান। এর থেকে হতাশাও পিছু নিতে পারে। তাই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগেই সন্তানের মোবাইলের নেশা ছাড়াতে হবে। নাহলে অজান্তেই বিপদ ঘনিয়ে আসছে।

ঝুঁকি রয়েছে অনেক
বর্তমানে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহারের বেশ কিছু বিপদও রয়েছে। যেমন আপনার সন্তান কিন্তু সাইবার বুলিং, ফিশিংসহ অন্যান্য সাইবার ক্রাইমের শিকার হতে পারে। পাশাপাশি ভালো-মন্দের বিচার না করে ভুয়া খবর, পর্নোগ্রাফি, হিংসাসহ নানা কুরুচিকর কন্টেন্টের সম্মুখীন হতে পারে তারা। যার প্রভাব শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই সুন্দর শৈশব নিশ্চিত করতে তাদের মোবাইলের নেশা কাটাতে হবে বাবা-মায়েদেরই।
এজেড