স্পোর্টস ডেস্ক
২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৩ পিএম
স্কটল্যান্ড, নটিংহ্যাম ফরেস্ট ও ডার্বি কাউন্টির সাবেক উইঙ্গার জন রবার্টসন আর নেই। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। কিংবদন্তি কোচ ব্রায়ান ক্লাফ যাঁকে একসময় বলেছিলেন, “আমাদের খেলাটার পিকাসো”, সেই রবার্টসনের মৃত্যুর খবরে ইংলিশ ও স্কটিশ ফুটবলে নেমে এসেছে শোক।
নটিংহ্যাম ফরেস্টের ইতিহাসে রবার্টসনের নাম চিরকাল লেখা থাকবে সোনালি অক্ষরে। ১৯৮০ সালে ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে হামবুর্গের বিপক্ষে একমাত্র গোলটি করেছিলেন তিনিই, এই জয়ে ফরেস্ট টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপের সেরা হয়। তার আগের মৌসুমে, ১৯৭৯ সালের ফাইনালে মালমোর বিপক্ষে ট্রেভর ফ্রান্সিসের জয়সূচক গোলের ক্রসটিও এসেছিল রবার্টসনের পা থেকেই।
স্কটল্যান্ডের জার্সিতে ২৮টি ম্যাচ খেলেছেন রবার্টসন। ১৯৮১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচজয়ী গোলের পাশাপাশি ১৯৮২ বিশ্বকাপের মঞ্চে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও গোল করেছিলেন তিনি। ক্লাব ও জাতীয়- দুই পর্যায়েই বড় ম্যাচের মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এই বাঁ-প্রান্তের জাদুকর।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে কোচিংয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন রবার্টসন। নটিংহ্যাম ফরেস্টের সাবেক সতীর্থ মার্টিন ও’নিলের সহকারী হিসেবে উইকম্ব ওয়ান্ডারার্স, নরউইচ সিটি, লেস্টার সিটি, সেল্টিক ও অ্যাস্টন ভিলায় কাজ করেছেন তিনি।
২০১২ সালে প্রকাশিত তার আত্মজীবনী সুপারট্র্যাম্প-এ ব্রায়ান ক্লাফের বিখ্যাত মন্তব্যের কথাও উঠে আসে। ক্লাফ একসময় রবার্টসনকে ‘অগোছালো, ফিটনেসহীন, আগ্রহহীন সময়ের অপচয়’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। আর পরে তাকেই গড়ে তুলেছিলেন, নিজের ভাষায়, “আমি যাদের দেখেছি, ব্রাজিলিয়ান বা ইতালিয়ানদের মতোই নিখুঁত বল ডেলিভারি দিতে পারে এমন একজন সেরা খেলোয়াড়।”
নটিংহ্যাম ফরেস্টের অধিনায়ক জন ম্যাকগভর্ন স্মরণ করেছেন রবার্টসনকে ভিন্ন এক তুলনায় “সে ছিল রায়ান গিগসের মতো, তবে পার্থক্য একটাই- দুই পায়েই সমান দক্ষ, আর হয়তো আরও বেশি প্রতিভাবান।”
ফুটবলের এক বর্ণাঢ্য অধ্যায়ের নীরব সমাপ্তি ঘটালেন জন রবার্টসন। কিন্তু বড় ম্যাচে তার সেই বাঁ পায়ের জাদু আর ইতিহাস গড়া মুহূর্তগুলো থেকে যাবে ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতিতে।