images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত মদ্যপানের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে বোর্ড

স্পোর্টস ডেস্ক

২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:১৯ পিএম

সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। অস্ট্রেলিয়া সফরে মাত্র ১১ দিনেই অ্যাশেজ সিরিজ খুইয়ে বসেছে বেন স্টোকসের দল। প্রথম তিন টেস্টেই বাজেভাবে হেরেছে ইংলিশরা। এমন বাজে পারফর্ম্যান্সের কারণে যখন সমালোচনা তুঙ্গে তখন তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন ক্রিকেটারদের মদ্যপানের বিষয়টি। 

অ্যাশেজ সিরিজ চলাকালে বিরতির সময় অতিরিক্ত মদ্যপানের অভিযোগ খতিয়ে দেখবে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতীরবর্তী শহর নুসায় কাটানো সময়ে কয়েকজন ক্রিকেটারের আচরণ নিয়ে ওঠা প্রতিবেদনগুলো তদন্তের আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্টের মাঝখানে কুইন্সল্যান্ড উপকূলে নুসায় চার রাত কাটিয়েছিল ইংল্যান্ড দল। বিবিসিসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে এবং এর আগে ব্রিসবেনে (যেখানে দ্বিতীয় টেস্ট হয়) দু’দিন ধরে দলের কিছু সদস্য উল্লেখযোগ্য সময় ধরে মদ্যপান করছিলেন।

যদিও তৃতীয় টেস্টে অ্যাডিলেডে পারফরম্যান্সের উন্নতি করেছিল ইংল্যান্ড, তবু ম্যাচটি হেরে যায় তারা। ফলে মাত্র ১১ দিনের ক্রিকেটেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে অ্যাশেজ ধরে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া।

ইংল্যান্ডের ক্রিকেট পরিচালক রব কি বিবিসি স্পোর্টকে বলেন, “শিরোনাম অনেক সময় বিভ্রান্তিকর হয়। কোথাও বলা হচ্ছে এটা নাকি স্ট্যাগ ডু ছিল। ছয় দিন ধরে টানা মদ্যপানের গল্প যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আসল ঘটনা কী, আর কোনটা বাড়িয়ে বলা হয়েছে সেটাই আমরা খতিয়ে দেখব।”

নুসায় এই বিরতির পরিকল্পনা অ্যাশেজ শুরুর আগেই করা হয়েছিল এবং প্রথম দুই টেস্টে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরও তা বাতিল করা হয়নি। পুরো স্কোয়াডই নুসায় থাকলেও রব কি তখন কুইন্সল্যান্ডের অন্য একটি এলাকায় ছিলেন। ক্রিকেটারদের আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, সেখানে গণমাধ্যমের নজর থাকবে। টিভি ক্যামেরা ও আলোকচিত্রীদের তোলা ছবিতে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কের একটি বারের বাইরে বসে কয়েকজন খেলোয়াড় মদ্যপান করছেন।

এ প্রসঙ্গে কি বলেন, “পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড় লাঞ্চে বসে আছে, দু’একজন পানীয় নিচ্ছে, এই ছবি দেখেই পুরো বিষয়টা বোঝা যায় না। কিন্তু যদি সত্যিই এটা এমন পর্যায়ে গিয়ে থাকে যে সবাই সারাক্ষণ অতিরিক্ত মদ্যপান করছে, তাহলে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমি কোনো ‘ড্রিংকিং কালচার’-এর পক্ষে নই।”

এর আগে নিউজিল্যান্ড সফরে সীমিত ওভারের সিরিজ চলাকালে ম্যাচের আগের রাতে সাদা বলের অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক ও ব্যাটার জ্যাকব বেটেলের মদ্যপানের অভিযোগও খতিয়ে দেখেছিলেন কি। “ওটা আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তার পর্যায়ে ছিল না, তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে কথা বলার মতো বিষয় ছিল,” বলেন কি। “গত চার বছরে এমন ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। আমাদের স্পষ্ট প্রক্রিয়া আছে, কারও আচরণ সীমা ছাড়ালে কী করতে হবে। এটা ছিল আসলে সামনে কী আসছে, তার একটা সতর্ক সংকেত। আমি ডিনারের সঙ্গে এক গ্লাস ওয়াইন খাওয়ার বিপক্ষে নই। এর বেশি হলে সেটা আমার কাছে অযৌক্তিক।”

নুসায় কিছু খেলোয়াড়ের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অ্যাশেজের মাঝখানে এই বিরতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন কি। তার যুক্তি, ব্রুক, বেটেল, বেন ডাকেট, জোফরা আর্চারসহ কয়েকজন ক্রিকেটার নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফর এবং সামনে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে প্রায় ছয় মাস বাড়ির বাইরে থাকবেন।

“হ্যারি ব্রুক এই পুরো শীতে মাত্র ছয় দিন বাড়িতে থাকতে পারবে,” বলেন কি। “আমাদের এমন সময় তৈরি করতে হবে, যখন খেলোয়াড়রা ক্রিকেট থেকে একটু দূরে যেতে পারে। তারা তো বাড়িতে গিয়েও সেটা পারবে না। “এখন এমন একটা সময়ে আমরা বাঁচছি, যখন ক্রিকেট এড়ানো প্রায় অসম্ভব। ফোন খুললেই ইনস্টাগ্রামে ক্রিকেটের খবর আসে। খেলোয়াড়রা বলে দেখে না, কিন্তু বাস্তবে দেখে। বিশেষ করে অ্যাশেজের মতো সিরিজে চাপ আর নজরদারি থেকে পালানোর সুযোগ নেই। তাই মাঝেমধ্যে সবকিছু ভুলে সাধারণ মানুষের মতো কিছু সময় কাটানো মানসিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”