স্পোর্টস ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:১৬ পিএম
ইতিহাসের অন্যতম সফল ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনা। বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমীর ভালোবাসার নাম এই কাতালান ক্লাব। সম্প্রতি ফুটবল দুনিয়ায় গুঞ্জন উঠেছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নাকি বার্সেলোনাকে কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, তিনি ক্লাবটি কিনতে প্রায় ১০ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা।)।
এই গুঞ্জনের পেছনে একটি বড় কারণ হলো বার্সেলোনার বর্তমান আর্থিক সংকট। ক্লাবটির ঋণের পরিমাণ এখন ২.৫ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি। দীর্ঘদিন ধরেই আর্থিক চাপে রয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে সৌদি যুবরাজের বিশাল অঙ্কের প্রস্তাব স্বাভাবিকভাবেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি সৌদি আরবের তথাকথিত ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’ বা ক্রীড়ার মাধ্যমে বৈশ্বিক প্রভাব বাড়ানোর কৌশলের অংশ হতে পারে। এর আগেও সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) ফুটবলসহ বিভিন্ন খেলায় বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করেছে।
তবে বাস্তবতা হলো, বার্সেলোনাকে পুরোপুরি কেনা প্রায় অসম্ভব। কারণ, বার্সেলোনা কোনো ব্যক্তি বা কোম্পানির মালিকানাধীন ক্লাব নয়। এটি একটি সদস্য (সোসিও) মালিকানাধীন ক্লাব। ক্লাবের হাজার হাজার সদস্য ভোটের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। ঐতিহ্যগতভাবে তারা বাইরের কোনো ব্যক্তি বা দেশের হাতে ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে রাজি নন।
ফুটবল ও অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরব চাইলে বার্সেলোনার বাণিজ্যিক খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ক্লাব পরিচালনা বা মাঠের ফুটবলের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সৌদি যুবরাজের বার্সেলোনা কেনার খবরটি আপাতত গুজবই বেশি, বাস্তবতা কম। তবে এই আলোচনা বার্সেলোনার আর্থিক সংকট এবং ইউরোপীয় ফুটবলে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ কাঠামো নিয়ে নতুন করে ভাবনার সুযোগ করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সৌদি আরব ইতিমধ্যেই ফুটবল জগতে বড় শক্তি হয়ে উঠছে। বিপুল অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা তাদের ‘ভিশন ২০৩০’ বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছে। বার্সেলোনাকে ঘিরে এই আলোচনাও সেই বৃহৎ পরিকল্পনারই একটি অংশ বলে মনে করছেন অনেকে।