images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

পলক ফেললেন, তো মিস করলেন শোয়েব আখতারকে

স্পোর্টস ডেস্ক

১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৫ পিএম

ক্রিকেটের মাঠে যখন গতির কথা ওঠে, তখন একটাই নাম সবার আগে মনে পড়ে শোয়েব আখতার! রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস নামে খ্যাত এই পাকিস্তানি দানব ছিলেন গতি আর আগ্রাসনের প্রতীক। তাঁর বোলিং দেখে ব্যাটসম্যানরা কাঁপতেন, দর্শকরা উন্মাদ হয়ে উঠতেন। শোয়েব মানেই জীবন, শোয়েব মানেই অপ্রতিরোধ্য পেসের ঝড়!

২০০২ সালের ২৭ এপ্রিল, লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ। ক্রেইগ ম্যাকমিলানের সামনে দাঁড়িয়ে শোয়েব ছুড়লেন একটা আগুনের গোলা ১০০.০৪ মাইল/ঘণ্টা (১৬১ কিমি/ঘণ্টা)! প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ মাইলের বাধা ভাঙলেন তিনি। কিন্তু আইসিসি স্বীকৃতি দিল না। বলা হল, স্ট্যান্ডার্ড যন্ত্র ছিল না। তাতে কী! পাকিস্তান বোর্ড গর্বে ফেটে পড়ল, আর শোয়েব বললেন, “এটা আমার জন্য যথেষ্ট, আমি পৃথিবীর দ্রুততম!”

কিন্তু আসল ইতিহাস লেখা হল পরের বছর। ২০০৩ বিশ্বকাপ, কেপ টাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। নিক নাইটের সামনে শোয়েবের মেইডেন ওভারের শেষ বলটা যেন বজ্রপাত! স্পিড গানে উঠল ১৬১.৩ কিমি/ঘণ্টা (১০০.২৩ মাইল/ঘণ্টা)! এবার আইসিসি বাধ্য হল স্বীকৃতি দিতে। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও জায়গা পেল এই ডেলিভারি। আজ, ২০২৫ সালেও এই রেকর্ড অক্ষত, কেউ ছুঁতেও পারেনি!

ব্রেট লি, শন টেইট, মিচেল স্টার্করা কাছাকাছি এসেছিলেন। টেইট তো ১০০.১ মাইল ছুঁয়েছিলেন লর্ডসে। কিন্তু শোয়েবের মসনদ কাঁপেনি। আজও তিনি গতির একক অধিপতি!

তবে শোয়েবের ক্যারিয়ারে আক্ষেপও কম নয়। ইনজুরি, বিতর্ক, মাঠের বাইরের ঝামেলা; সব মিলিয়ে তাঁর সামর্থ্যের তুলনায় উইকেট কম। টেস্টে ১৭৮, ওয়ানডেতে ২৪৭-এ তো তাঁর গ্রেটনেসের কাছে নগণ্য! নিজেকে একটু সামলে নিলে হয়তো আরও অনেক রেকর্ড ভাঙতেন। 

শোয়েব আখতার ক্রিকেটের সেই খামখেয়ালি গতিবান দানব, যাঁর মতো আর কেউ আসেনি। তাঁর গতির ঝড় আজও মনে দোলা দেয়। রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস চিরকাল অপরাজেয়!