স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:০৯ পিএম
কলকাতায় লিওনেল মেসির বহু প্রতীক্ষিত ‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর আয়োজন শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় চরম বিশৃঙ্খলায়। শনিবার সকালে সল্টলেক স্টেডিয়ামে মাত্র ২০ মিনিট অবস্থানের পরই মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টাইন মহাতারকা, আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মাঠে উপস্থিত দর্শকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
এই ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আইনশৃঙ্খলা) জাওয়েদ শামিম নিশ্চিত করেন, মেসি ইভেন্টের প্রধান আয়োজক শতদ্রু দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শতদ্রু দত্তই ছিলেন মেসির ভারত সফরের মূল উদ্যোক্তা ও প্রোমোটার। ‘গোট ট্যুর’-এর সব প্রচারণা ব্যানার ও পোস্টারে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল—‘A Satadru Dutta Initiative’।
মেসির আসার আগে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বক্তব্যে শতদ্রু দত্ত বলেছিলেন, “১৪ বছর পর মেসি ভারতে আসছেন- এটা আনন্দের বিষয়। সমর্থকদের জন্য এটা বড় সুযোগ। ভারতে ফুটবলের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক আবার গড়ে উঠছে। আগে কখনো এত স্পনসর ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত হয়নি।”

এর আগেও ভারতের ফুটবল ইতিহাসে বড় নাম আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন দত্ত। পেলে ও দিয়েগো ম্যারাডোনাকে ভারতে আনার পেছনেও তার অবদান ছিল। এমনকি ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক আলোচনায় তিনি ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ভারতে আনার আগ্রহের কথাও জানিয়েছিলেন। এদিকে শনিবারের আয়োজন সব প্রস্তুতিকে ছাপিয়ে যায় বিশৃঙ্খলার কারণে।
সল্টলেক স্টেডিয়ামে ঢোকার পরপরই মেসিকে ঘিরে ধরেন রাজনীতিক, পুলিশ কর্মকর্তা, ভিআইপি ও তাঁদের সহযোগীরা। মানুষের এমন ভিড় তৈরি হয় যে, টিকিট কেটে আসা দর্শকদের চোখে মেসি কার্যত অদৃশ্যই থেকে যান। মেসিকে দেখা যায় কিছুটা হতভম্ব অবস্থায়। তিনি সাবেক ফুটবলারদের অটোগ্রাফ দিচ্ছিলেন এবং ধীরে মাঠ ঘোরার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই আরও খারাপ হতে থাকে।
এ সময় মাইকে কাঁপা কণ্ঠে বারবার অনুরোধ করতে শোনা যায় শতদ্রু দত্তকে, “দয়া করে তাকে একা থাকতে দিন। দয়া করে মাঠ খালি করুন।” কিন্তু সেই অনুরোধ কেউই কানে তোলেননি। নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মকর্তাদের ভিড়ে মেসি প্রায় আড়ালেই পড়ে যান।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় শেষ পর্যন্ত মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন মেসি, যা দর্শকদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তোলে। ঘটনার পর জাওয়েদ শামিম জানান, “এ ঘটনায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং প্রধান আয়োজককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আয়োজকরা টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলছেন। সেটা কীভাবে করা যায়, তা আমরা দেখব।”