images

স্পোর্টস / ফুটবল

কী এই 'ফিফা শান্তি পুরস্কার', কেন ট্রাম্পকে দেওয়া হলো

স্পোর্টস ডেস্ক

০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:১০ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফিফা প্রথমবারের মতো একটি নতুন পুরস্কার দিয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে **‘ফিফা শান্তি পুরস্কার’**। ফিফা বলছে, ফুটবলের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি গড়ার জন্য এই পুরস্কার চালু করা হয়েছে। কিন্তু এই পুরস্কার ঘোষণার ধরন ও ট্রাম্পকে দেওয়ায় বিশ্বজুড়ে তীব্র ক্ষোভ, উপহাস আর সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে।

কীভাবে হঠাৎ এই পুরস্কার এলো?

গতকাল (৬ ডিসেম্বর ২০২৫) ওয়াশিংটন ডিসির কেনেডি সেন্টারে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠান চলছিল। হঠাৎ ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো মঞ্চে উঠে ঘোষণা করলেন যে, একটি নতুন “ফিফা শান্তি পুরস্কার” চালু হচ্ছে এবং প্রথম পুরস্কার পাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প!

এর আগে এই পুরস্কারের নাম, নিয়ম, মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া,কিছুই কেউ জানত না। ফিফা কাউন্সিলের অনেক সদস্যই বলছেন, অনুষ্ঠান শুরুর আগ পর্যন্ত তাঁরা এটা শোনেননি। কোনো মনোনয়ন, যাচাই-বাছাই বা ভোটিং ছিল না। সবকিছু যেন মুহূর্তেই তৈরি করা।

ইনফান্তিনো ট্রাম্পকে মঞ্চে ডেকে মেডেল পরিয়ে দেন এবং বলেন, “ট্রাম্প বিশ্ব শান্তিতে অসাধারণ অবদান রেখেছেন।” ট্রাম্প বক্তৃতায় বলেন, তিনি “আটটা যুদ্ধ বন্ধ করেছেন এবং লাখো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন।”

বিশ্ব কী বলছে?

সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম, সবখানেই এখন একটাই কথা। এটা “হাস্যকর”, “রাজনৈতিক তোষামোদ” এবং “শান্তি শব্দের অপমান”। অনেকে লিখছেন, “নোবেল শান্তি পুরস্কার না পাওয়ায় ইনফান্তিনো নিজেই একটা পুরস্কার বানিয়ে ট্রাম্পকে দিলেন।” মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, ফিফা যেখানে গাজা নিয়ে দুটো কথা বলার জন্য খেলোয়াড়দের জরিমানা করে, সেখানে ট্রাম্পের মতো বিতর্কিত নেতাকে শান্তি পুরস্কার দেওয়া চরম দ্বৈত নীতি।

কেন এত রাগ?

ফিফা সবসময় বলে, “আমরা রাজনীতির বাইরে থাকি।” কিন্তু এবার স্পষ্টভাবে একজন রাজনৈতিক নেতাকে পুরস্কৃত করল। ২০২৬ বিশ্বকাপ যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হবে। অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পকে খুশি রেখে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সুবিধা নিতেই এই তাৎক্ষণিক পুরস্কার। ইনফান্তিনো ও ট্রাম্পের ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আগেও ইনফান্তিনো প্রকাশ্যে বলেছেন, ট্রাম্পের নোবেল পাওয়া উচিত ছিল।

একটা পুরস্কার যদি ঘোষণার আগেই দেওয়া হয়, তার কোনো নিয়ম না থাকে, আর প্রথম পুরস্কারই যায় এমন একজনের হাতে যিনি বিশ্বের বড় অংশের কাছে বিতর্কিত, তাহলে সেই পুরস্কারের মর্যাদা কতটুকু থাকে? ফিফার এই সিদ্ধান্ত শুধু ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্কই তৈরি করেনি, বরং ফিফার নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাকেও গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।