স্পোর্টস ডেস্ক
০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০৭ পিএম
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম অ্যাশেজ টেস্টের দলে জায়গা পাননি স্যাম কনস্টাস। তার পরিবর্তে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তাসমানিয়ার ওপেনার জেক ওয়েদারেল্ড। আসন্ন সিরিজের জন্য নির্বাচিত ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে রয়েছে বেশ কিছু নতুন কৌশলগত বিকল্প।
এ বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বাদ পড়লেও মার্নাস লাবুশেন ফিরছেন টেস্ট স্কোয়াডে। কুইন্সল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তিনি, তবে তিনি কোন পজিশনে ব্যাট করবেন তা নির্ভর করছে অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন পুরোপুরি বোলিং করতে পারেন কি না তার ওপর। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি জানিয়েছেন, এখনো ব্যাটিং অর্ডার বা চূড়ান্ত একাদশ ঠিক হয়নি। তবে লাবুশেনকে যেকোনো পজিশনে ব্যাট করতে দেখা যেতে পারে।
“ও তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারে, এমনকি ওপেনও করতে পারে,” বলেন বেইলি। “তার স্কিল সেট দুই জায়গাতেই মানানসই। সাম্প্রতিক সময়ে ও দারুণ ফর্মে আছে।” বেইলির মতে, ওয়েদারেল্ডের পারফরম্যান্সই তাকে সুযোগ এনে দিয়েছে। গত ১৪ মাসে তাসমানিয়া ও অস্ট্রেলিয়া ‘এ’-এর হয়ে ওপেনার হিসেবে ৫৩.৫০ গড়ে ১,৩৯১ রান করেছেন তিনি।
“গত ১৮ থেকে ২৪ মাসের রেকর্ড বেশ ভালো,” বলেন বেইলি। “একটা ইনিংস নয়, ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিংয়ে উন্নতি করছে সে। নিজের খেলার ধরন পরিষ্কারভাবে বোঝে এবং স্বাভাবিকভাবেই চার রান প্রতি ওভারের গতিতে স্কোর করে, তাও ঝুঁকি না নিয়েই।”
বেইলি আরও জানান, বাদ পড়ার খবরটা কনস্টাস খুব ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন। “স্যামের সঙ্গে কথা বলা সবসময়ই আনন্দের,” বলেন তিনি। “ওর মানসিকতা দারুণ। নিজের খারাপ সময় নিয়েও সে আশাবাদী। আমরা আলোচনা করেছি কীভাবে ওকে সহায়তা করা যায় এবং কোন দিকগুলোতে উন্নতি দেখতে চাই। শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটে সবকিছুই নির্ভর করে রান করার ওপর।”
অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন ও বো ওয়েবস্টার দুজনই স্কোয়াডে আছেন। তবে দুজনকেই একসঙ্গে একাদশে রাখা হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। গ্রিন আগামী ১১ নভেম্বর ওয়াকার গ্রাউন্ডে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পরবর্তী শিল্ড ম্যাচে ১৫ থেকে ২০ ওভার বল করবেন বলে জানা গেছে। বেইলি জানান, দুজন অলরাউন্ডারকেই এক দলে রাখার বিকল্প তাদের আছে। গ্রিনও ব্যাটিং অর্ডারের যেকোনো জায়গায় নামতে পারেন। সাম্প্রতিক দুই টেস্টে ক্যারিবিয়ান কন্ডিশনে তিন নম্বরে দারুণ খেলেছেন তিনি। তবে আসন্ন শিল্ড ম্যাচে তার বোলিং ফিটনেস পর্যবেক্ষণে রাখবে নির্বাচকরা।
“বিকল্প থাকা সবসময়ই ভালো,” বলেন বেইলি। “গ্রিনের বোলিং দেখা গুরুত্বপূর্ণ হবে। এছাড়া আমাদের ১৫ জনের স্কোয়াডের মধ্যে ১৪ জনই এখন শিল্ডে খেলছে। ম্যাচ শেষে সবার শারীরিক অবস্থা দেখে সিদ্ধান্ত নেব। এখনই দল ঘোষণা করার কোনো তাড়া নেই।” একইসঙ্গে বেইলি জানান, অভিজ্ঞ ওপেনার উসমান খাজা এবার শিল্ডের চতুর্থ রাউন্ডে খেলবেন না। আগের ম্যাচে হালকা অ্যাডাক্টর ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি, যদিও অ্যাশেজের জন্য তাকে ফিট হিসেবে ধরা হচ্ছে। পরিকল্পনামাফিকই তিনি প্রথম তিন রাউন্ড খেলে চতুর্থ রাউন্ডে বিশ্রামে থাকবেন।
প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেবেন স্টিভেন স্মিথ। পিঠের চোটে ভুগলেও কামিন্স দলের সঙ্গে পার্থে ভ্রমণ করবেন এবং দ্বিতীয় টেস্টে ফিট হওয়ার লক্ষ্য রাখবেন। জশ হেইজলউড, মিচেল স্টার্ক, স্কট বোল্যান্ড ও নাথান লায়ন থাকছেন মূল বোলিং আক্রমণে। অন্তত একজন অলরাউন্ডার যোগ হবেন তাদের সঙ্গে। জ্যামাইকা টেস্টে বাদ পড়ার পর আবার ফিরছেন স্পিনার লায়ন।
রিজার্ভ পেসার হিসেবে দলে আছেন ব্রেন্ডন ডগেট ও শন অ্যাবট। হিপ ইনজুরির কারণে ক্যারিবিয়ান সফর মিস করলেও ফিরেছেন ডগেট। অ্যাবট আগের ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা সফরেও রিজার্ভ বোলার ছিলেন। কুইন্সল্যান্ডের হয়ে দুর্দান্ত শুরু করলেও (দুই ম্যাচে ১১ উইকেট) এবার জায়গা পাননি মাইকেল নিসার। তবে বেইলি জানিয়েছেন, সিরিজের পরের দিকের ম্যাচগুলোয় তাকে দেখা যেতে পারে।
“ও এখনো আমাদের পরিকল্পনায় আছে,” বলেন বেইলি। “বলিং আক্রমণে ভারসাম্য রাখতে কিছু বিশেষ স্কিল সেট দরকার হয়, পার্থে সেটাই বিবেচনায় থাকবে।” রিজার্ভ উইকেটকিপার হিসেবে থাকছেন জশ ইংলিস। এ বছর তিনটি টেস্টে ব্যাটসম্যান হিসেবেও খেলেছেন তিনি। জ্যামাইকা টেস্টে অ্যালেক্স কেয়ারি কনকাশনে পড়লে কিপিংও করেন ইংলিস।
আগামী ১১ নভেম্বর ওয়াকার গ্রাউন্ডে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে শিল্ডের চতুর্থ রাউন্ডে খেলবেন ইংলিস, যা ভারতের বিপক্ষে শেষ টি–টোয়েন্টির মাত্র তিন দিন পর শুরু হবে।
অস্ট্রেলিয়া দল (প্রথম অ্যাশেজ টেস্ট, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে):
স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), শন অ্যাবট, স্কট বোল্যান্ড, অ্যালেক্স কেয়ারি (উইকেটকিপার), ব্রেন্ডন ডগেট, ক্যামেরন গ্রিন, জশ হেইজলউড, ট্রাভিস হেড, জশ ইংলিস (উইকেটকিপার), উসমান খাজা, মার্নাস লাবুশেন, নাথান লায়ন, মিচেল স্টার্ক, জেক ওয়েদারেল্ড, বো ওয়েবস্টার।