images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

কাজের সময়ে কাজী হতে না পারা দুই টাইগার ‘স্টার’

সালমান ইসলাম

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:০০ পিএম

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে সেরা দুই তরুণ ক্রিকেটারের নাম নিলে প্রথমেই আসে জাকের আলী অনিক ও তাওহীদ হৃদয়। ধরা হয় ভবিষ্যৎ টাইগার ক্রিকেটের উজ্জল তারকা। অবশ্য নাম তাকমা ইতিমধ্যে লাগিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট প্রেমীরা। জাকেরকে মানা হয় ‘ফিনিশার’, অন্যদিকে হৃদয়কে টাইগারদের ‘স্টারবয়’। স্বাভাবিকভাবেই সমর্থক থেকে ক্রিকেট ভক্তরা তাই মুখিয়ে থাকে তাদের বড় কিছু দেখার। কিন্তু সময় এলেই যেনো সব ‘ফিনিশড’। অনন্ত ২০২৫ সালে তাদের ইনিংসের দিক তাকালে তাই মনে হয়। 

ফিনিশার মানা হয় জাকের আলীকে। স্বাভাবিকভাবেই শেষদিকে তার ব্যাটে ঝড় দেখতে মুখিয়ে থাকেন সমর্থকরা। তবে চলমান এশিয়া কাপে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না টাইগার এই ব্যাটার। তার ব্যাটিং নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে, কেননা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪০ বছর বয়েসে আফগান তারকা মোহাম্মদ নবী ফিনিশিং রোলে যে ব্যাটিং এপ্রোচ দেখিয়েছেন ২৭২.৭৩ স্টাইক রেটে ২২ বলে ৬০ রান করে, সেখানে জাকেরের ফিনিশিং নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এমনকি দলে জায়াগ পাওয়া নিয়েও।

এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে ব্যাট করতে নেমে করেছেন ০*(১),৪১(৩৪) ও ১২(১৩)। সব মিলিয়ে ৩ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান। বিপরীতে বল খেলেছেন ৪৮ টি। জাকের সব থেকে বেশি হতাশা করেছেন আফগানদের বিপক্ষে শেষ দিকে ডট বলা খেলে। সে ম্যাচে ৯২.৩১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করে বেশ হতাশাই উপহার দিয়েছেন জাকের। 

Screenshot_2025-09-20_170052

তাকে নিয়ে মিসবাহ বলেন, ‘ঠিক আছে জাকের বল মারতে পারছে না। কিন্তু এটা অপরাধ যে আপনি শেষ তিন ওভারে শুধু বল মিসই করে গেলেন। স্লোয়ার বল কিপারের কাছে যাচ্ছে, একটু সামনে বল দিলে সেটাও আপনি মিস করছেন। ফিনিশার হিসেবে আপনি বল মারতে চাইবেন ঠিক আছে, কিন্তু ব্যাটার হিসেবে বল ব্যাটে লাগা জরুরি। এক রান তো আপনি যেকোনো জায়গায় খেললে পাবেন। একটু ফাঁকা জায়গায় খেললে দুই রানও নেয়া যায়। পুরোপুরি পরাস্ত হলে তো বল আর রানও সমান হবে না।’ 

অপরদিকে তাওহীদ হৃদয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দূর্দান্ত পারফরমেন্স করে এসেছিলেন বাংলাদেশের জাতীয় দলে। এসেই তিনি আশা জাগানিয়া পারফর্ম্যান্সে সবার বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। দেশে-বিদেশে সর্বত্র চলেছে তার ব্যাট। এমনকি শ্রীলঙ্কার মাটিতে ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়েও তিনি স্থানীয় দর্শকদের মনে দাগ কেটেছিলেন। তার নামের পাশে যুক্ত হয় ‘স্টারবয়’ তকমা।

Screenshot_2025-09-20_170148

দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স দিয়েই আগমনী অধ্যায় লিখেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু হুট করেই গেল বছর খানেক সময় ধরে তার পারফরমেন্সের গ্রাফ হয়েছে নিম্নগামী। এশিয়া কাপের মঞ্চে প্রবেশের আগে তো দলে তার প্রয়োজনীতা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। তবে হৃদয় বিশ্বাস করেন তিনি ফিরবেন। সেই বিশ্বাস অবশ্য তার উপর গোটা টিম রেখেছে। কিন্তু বিশ্বাসের জায়গাটা কতটুকু রেখেছেন তিনি? এশিয়া কাপের তিন ম্যাচে ১০৮.৬৯ স্টাইরেটে করেছেন ৬৯। বিপরীতে বল খেলেছেন ৭৫টি। এই ব্যাটিং হতাশই করেছে দর্শকদের।

অবশ্য হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে হৃদয় বলেছেন, ‘আমার হাতে যা আছে আমি তা করতে পারব, আমি তাই করছি। আশা করছি এখান থেকে ওভারকাম করব।’ এই সংগ্রামের সময় কেটে যাওয়া অবধারিত। কিন্তু সেজন্যে হৃদয়কে নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে হবে। তার উদাহরণ হিসেবে রয়েছেন বিশ্বমানের ক্রিকেটাররা। তিনি বলেন, ‘দেখেন বিশ্বমানের খেলোয়াড়দেরও ক্যারিয়ার গ্রাফ একইভাবে যায় না।’ হৃদয়-জাকেরদের ওভারকাম করা বাংলাদেশের জন্যেও ভীষণ প্রয়োজনীয়। কেননা দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বভার তাদের উপরই ন্যাস্ত।