স্পোর্টস ডেস্ক
১৭ আগস্ট ২০২৫, ০১:১০ পিএম
বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন চলছে পাওয়ার হিটিংয়ের নতুন জোয়ার। গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুত রান তোলার গুরুত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে উন্নত ব্যাটিং প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ পদ্ধতির চাহিদাও। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বিশেষায়িত পাওয়ার হিটিং কোচ জুলিয়ান উডকে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা পরিচিত হচ্ছে বিশ্বমানের আধুনিক প্রশিক্ষণ যন্ত্র ও পদ্ধতির সঙ্গে। এরই অংশ হিসেবে আলোচনায় উঠে এসেছে ‘প্রো-ভেলোসিটি ব্যাট’। যা বর্তমানে ক্রিকেটারদের ব্যাটিং উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী অনুশীলন উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রো-ভেলোসিটি ব্যাট কোনো সাধারণ ব্যাট নয়। দেখতে এটি অনেকটা ভারী রড বা বিশেষ ধাতব ব্যাটের মতো হলেও, এটি মূলত একটি ট্রেনিং টুল, যার প্রধান কাজ ব্যাটারের ব্যাটিং মেকানিক, ব্যাট স্পিড, হ্যান্ড-আই কো-অর্ডিনেশন এবং শক্তি বাড়ানো। ব্যাটটির ব্যারেল বা মূল অংশ স্লাইড করার মতো তৈরি, যেখানে লাগানো থাকে ৮টি রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড। এই ব্যান্ডগুলোর প্রতিরোধ বা রেজিস্ট্যান্স ধীরে ধীরে বাড়ানো যায়, ফলে ব্যাট চালানো ক্রমেই কঠিন হয়। যার ফলে ব্যাটারকে জোর, স্পষ্টতা এবং নিখুঁত মুভমেন্টের মাধ্যমে শট অনুশীলন করতে হয়।
কিভাবে কাজ করে এই ব্যাট?
টাইগার ক্রিকেটারদের নিয়ে জুলিয়ান উড এই ব্যাটের সাহায্যে ‘শ্যাডো শট’ প্র্যাকটিস করাচ্ছেন। যার মধ্যে রয়েছে ড্রাইভ, স্কোয়ার কাট, পুল ইত্যাদি। ব্যাটার যখন সঠিক মেকানিক এবং পর্যাপ্ত গতি নিয়ে ব্যাট চালায়, তখন ব্যাট থেকে একটি ‘ডাবল ক্লিক’ শব্দ শোনা যায়। এই শব্দই প্রমাণ করে ব্যাটিং মুভমেন্ট যথাযথ এবং ব্যাট স্পিড উপযুক্ত। যদি ব্যাট স্পিড কম হয় বা মেকানিক ভুল হয়, তাহলে শুধু একটি 'সিঙ্গেল ক্লিক' শোনা যায়। যা ভুল মুভমেন্ট নির্দেশ করে।
এই ব্যাটিং অনুশীলন পদ্ধতিটি মূলত ব্যাটারদের শরীরের বিভিন্ন অংশ হাত, কাঁধ, কোমর এবং চোখের সমন্বয় উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি এমনভাবে তৈরি, যাতে ব্যাটিং মেকানিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক হয়ে যায়, অর্থাৎ শট খেলার প্রক্রিয়া আরও স্বাভাবিক ও কার্যকর হয়।

সম্প্রতি বিসিবির প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস এই প্রো-ভেলোসিটি ব্যাট ব্যবহার করে অনুশীলন করছেন। দৃশ্যতই এটি তার ব্যাটিং ফর্মে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। শুধু পুরুষ দলই নয়, নারী ক্রিকেট দলেও এই ব্যাট ব্যবহার শুরু হয়েছে।
নারী দলের ব্যাটিং কোচ নাসিরউদ্দিন ফারুক বলেন, এটা খুবই কার্যকর একটা অনুশীলন পদ্ধতি। আমরা আগে কখনও এমন কিছু ব্যবহার করিনি। এটি আগের মতো শুধু মেশিন বা ড্রপ শটে হিট করার মতো নয়। এতে ব্যাটার ধীরে ধীরে ব্যাটিংয়ের শক্তি, গতি ও কৌশল সবকিছুতে উন্নতি করতে পারে। বিশেষ করে যারা ডেথ ওভারে হিট করতে চায়, তাদের জন্য এটা অসাধারণ একটি টুল।