স্পোর্টস ডেস্ক
০১ আগস্ট ২০২৫, ০১:৪১ পিএম
প্রায় দুই বছর পর অবশেষে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেলেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ওয়েস্ট হ্যামের এই ফুটবলারের বিরুদ্ধে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) করা ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন।
২০২৩ সালের আগস্টে পাকেতার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে এফএ। পরবর্তীতে গত বছরের মে মাসে অভিযোগ আনা হয় যে, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে হলুদ কার্ড খেয়েছিলেন যাতে বেটিং মার্কেটে প্রভাব পড়ে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আজীবন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে পারতেন ২৭ বছর বয়সি এই ফুটবলার।
চারটি নির্দিষ্ট ম্যাচে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল- ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর লেস্টার সিটির বিপক্ষে, ২০২৩ সালের ১২ মার্চ অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে, ২১ মে লিডস ইউনাইটেডের বিপক্ষে এবং ১২ আগস্ট বোর্নমাউথের বিপক্ষে। তবে কমিশনের শুনানিতে এসব অভিযোগ ‘প্রমাণিত হয়নি’ বলে জানানো হয়েছে।
তবে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা না করার অভিযোগে পাকেতাকে দুটি আলাদা চার্জে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, এ ব্যাপারে কী শাস্তি হবে, তা দ্রুত জানিয়ে দেওয়া হবে। পাকেতা বলেন, “তদন্তের প্রথম দিন থেকেই আমি নির্দোষ দাবি করে এসেছি। এখন আমি শুধু বলবো, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। আমি ফুটবলে ফিরে যেতে মুখিয়ে আছি-হাসিমুখে খেলার জন্য।”

তিনি আরও বলেন, “আমার স্ত্রী শুরু থেকে আমার পাশে ছিল। ধন্যবাদ জানাই ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড, ক্লাবের সমর্থকদের, আমার পরিবার, বন্ধু এবং আইনজীবী দলের সবাইকে যারা আমাকে সাহস দিয়েছেন।” পাকেতার আইনজীবী অ্যালেস্টার ক্যাম্পবেল বিবিসিকে বলেন, “সে খুব আবেগাপ্লুত এবং খুশি। যেন একটা বিশাল পাথর নেমে গেছে তার বুক থেকে।”
২০২৪-২৫ মৌসুমে ওয়েস্ট হ্যামের হয়ে ৩৩টি প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে ৪ গোল করেছেন পাকেতা। গত মে মাসে টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখার পর কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সেদিনই ইনস্টাগ্রামে স্ত্রী মারিয়া ফার্নিয়ার লিখেছিলেন, “গত দুই বছর ধরে দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছি।” চার্জ গঠনের পর পাকেতা বলেছিলেন, “আমি দারুণভাবে বিস্মিত এবং হতাশ।”
২০২২ সালের আগস্টে ৩৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে লিওঁ থেকে পাকেতাকে দলে ভেড়ায় ওয়েস্ট হ্যাম। নিজের প্রথম মৌসুমেই দলকে ইউরোপা কনফারেন্স লিগ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। ২০২৩ সালের আগস্টে ম্যানচেস্টার সিটিতে প্রায় ৮৫ মিলিয়ন পাউন্ডে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তার। তবে ঠিক তখনই সামনে আসে এফএর তদন্ত।
আইনজীবী ক্যাম্পবেল জানিয়েছেন, এই সম্ভাব্য ‘স্বপ্নের ট্রান্সফার’ বাতিল হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে। তবে কমিশনের পূর্ণ রায় পাওয়ার পরই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ওয়েস্ট হ্যামের ভাইস-চেয়ারম্যান ক্যারেন ব্র্যাডি জানিয়েছেন, “আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। পুরো প্রক্রিয়াজুড়ে ক্লাব পাকেতার পাশে ছিল। এটা তার এবং তার পরিবারের জন্য কঠিন সময় ছিল। তবে সে পেশাদারিত্ব ধরে রেখেছে। এখন সবাই চাইছে এই অধ্যায় শেষ হোক।” এফএ জানিয়েছে, কমিশনের পূর্ণাঙ্গ লিখিত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তারা আর কোনও মন্তব্য করবে না।