images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

ওভাল টেস্টের আগে দুঃসংবাদ ভারতের

স্পোর্টস ডেস্ক

৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৭ এএম

অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির পঞ্চম ও শেষ টেস্টে খেলছেন না যশপ্রীত বুমরা। বৃহস্পতিবার থেকে ওভালে শুরু হচ্ছে ম্যাচটি। বিসিসিআইয়ের মেডিকেল টিম জানিয়েছে, বুমরাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে, যাতে পিঠের পুরনো সমস্যাটা আবার না ফিরে আসে।

বুমরার না থাকা একেবারে অপ্রত্যাশিত নয়। আগেই ঠিক করা হয়েছিল, ইংল্যান্ড সফরের পাঁচ ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে খেলবেন তিনি। সেই অনুযায়ী হেডিংলির প্রথম টেস্ট খেলেছেন, এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টে ছিলেন না, যেটি জিতেছিল ভারত। এরপর আবার খেলেছেন লর্ডস ও ওল্ড ট্রাফোর্ডে তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্ট।

ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের চতুর্থ দিনের পর থেকে আর বোলিং করেননি বুমরা। আর শেষ দুই টেস্টের মাঝে বিরতি ছিল মাত্র তিন দিন। এমন পরিস্থিতিতে হয়তো সিদ্ধান্তটা পরিবর্তনের কথা ভাবা হয়েছিল। বিশেষ করে, সিরিজ ২-২ তে সমতায় ফেরানোর সুযোগ ছিল বলে।

তবে চতুর্থ টেস্টে ধীরগতির পিচে প্রচুর ওভার বল করার পর বুমরাহর গতি অনেকটাই কমে যায়। ৩৩ ওভারে ২ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ক্যারিয়ারে প্রথমবার ইনিংসে ১০০ রানের বেশি দেন তিনি। একেকটি টেস্টে তাঁর প্রথম ইনিংসে ১৪০ কিমি প্রতি ঘণ্টার ওপরে বল করার হার হেডিংলিতে ছিল ৪২.৭%, সেটা নেমে আসে লর্ডসে ২২.৩%–এ, আর ওল্ড ট্রাফোর্ডে মাত্র ০.৫%।

Screenshot_2025-07-30_114803

তবু এখন পর্যন্ত সিরিজে ১৪ উইকেট নিয়ে মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বুমরা। ম্যানচেস্টারে ড্র হওয়ার পর ভারতীয় কোচ গৌতম গম্ভীর বলেছিলেন, বুমরা ফিট আছেন। তবে দুই দিন পরই তাঁকে বিশ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানায় দল।

বুমরার বদলি যে হতে যাচ্ছেন আকাশ দীপ, তার আভাস পাওয়া গেছে মঙ্গলবার ভারতীয় দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনে। চতুর্থ টেস্টে গ্রোয়েন চোটের কারণে খেলতে না পারলেও অনুশীলনে বেশ ছন্দে দেখা গেছে আকাশকে। সবুজাভ পিচে বল সুইং করাতে পেরেছেন তিনি।

এজবাস্টনে দ্বিতীয় টেস্টেই খেলেছিলেন আকাশ দীপ, যেটা ছিল তাঁর মেলবোর্ন ২০২৩–এর পর প্রথম টেস্ট। সেখানে ১০ উইকেটের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিল তাঁর, দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬/৯৯। ব্যাটারদের সহানুভূতিশীল উইকেতেও বল ঘোরাতে পেরেছিলেন।

Screenshot_2025-07-30_114847

তবে শুধু বুমরার বিকল্প নির্বাচন করলেই হবে না। গিল ও গম্ভীরের চিন্তা এখন পেস আক্রমণে ভারসাম্য রক্ষা করা। কারণ, সিরিজে তিন পেসার প্রসিধ কৃষ্ণ, শার্দুল ঠাকুর ও অনশুল কাম্বোজ তেমন ভালো কিছু করতে পারেননি। প্রসিধ দ্বিতীয় টেস্টের পর আর খেলেননি, আর ঠাকুর ও কাম্বোজ ওল্ড ট্রাফোর্ডে নিজেদের প্রথম স্পেলেই কার্যত থেমে যান।

এই অবস্থায় আবার সিরাজের ওপরই ভরসা করতে হচ্ছে ভারতকে। পাঁচ টেস্টেই খেলেছেন তিনি, সিরিজে পেসারদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৩৯ ওভার করেছেন। যদিও ফিটনেস ও অতিরিক্ত চাপ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে, তবে বিকল্পের অভাবে সিরাজকে খেলাতেই হচ্ছে।

এদিকে রিশভ পন্ত ইনজুরির কারণে খেলছেন না বলে উইকেটের পেছনে দায়িত্বে থাকবেন ধ্রুব জুরেল। ব্যাট হাতে দারুণ সাহসী হলেও, ইংল্যান্ডে অভিজ্ঞতা না থাকায় তাঁকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে। তাই টিম ম্যানেজমেন্ট ব্যাটিং গভীরতা বজায় রাখতে আবারও শার্দুলকে খেলাতে পারে, যার ফলে কুলদীপ যাদব হয়তো একাদশের বাইরে থেকে যাবেন।

ওভালের উইকেট ও আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে কুলদীপকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ম্যাচের আগের দিন উইকেটে ঘাস ছিল ভালোই, সেই সঙ্গে মেঘলা আবহাওয়ার পূর্বাভাস। তাই আগের মতোই জাদেজা-ওয়াশিংটন স্পিন জুটি নিয়ে খেলতে পারে ভারত। সব মিলিয়ে, ভারতীয় দল এই টেস্টেও একাধিক পজিশনে ভরসা রাখছে ভারসাম্য আর অভিজ্ঞতার ওপর। তবে বুমরার অনুপস্থিতিতে সেটা কতটা কাজে আসে, সেটাই এখন দেখার।