স্পোর্টস ডেস্ক
২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:১৪ পিএম
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে এশিয়া কাপ আয়োজন নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। অবশেষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামী ৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপ বসতে যাচ্ছে। তবে, পাকিস্তানের জনগণের জন্য বড় চিন্তার বিষয় হলো, সম্প্রচার রাইটস নিয়ে জটিলতার কারণে এই আসর টিভি পর্দায় দেখা নাও হতে পারে।
এশিয়া কাপের মিডিয়া রাইটস নিয়ে পাকিস্তানে তীব্র দর কষাকষি চলছে। ভারতীয় সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান সনি ইন্ডিয়া দুটি এশিয়া কাপের সম্প্রচার রাইটসের জন্য ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করেছে। এই রাইটসের আওতায় পাকিস্তানের দর্শকরা পুরুষ ও মহিলা দলের ম্যাচগুলো উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু এই বিপুল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগে পাকিস্তানের কোনো টিভি চ্যানেলই এখনো রাজি হয়নি। তাদের মতে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে এত বড় বিনিয়োগ থেকে লাভের আশা কঠিন।
গত বছর এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ২০২৪ থেকে ২০৩১ সাল পর্যন্ত আট বছরের মিডিয়া রাইটস সনি ইন্ডিয়ার কাছে ১৭০ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে। এই চুক্তিতে চারটি পুরুষ ও চারটি মহিলা এশিয়া কাপসহ ইমার্জিং কাপের ১১৯টি ম্যাচের সম্প্রচার অধিকার রয়েছে। এই আয়ের ২৫% (প্রায় ৪২.৫ মিলিয়ন ডলার) পাকিস্তানের অংশ, তবে ডিজিটাল রাইটস আলাদাভাবে বিবেচিত। ভারত থেকে আসে এই আয়ের প্রায় ৬৫%, যা এশিয়া কাপের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে।
এশিয়া কাপের ১৯টি ম্যাচের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান ফাইনালে পৌঁছালে তিনটি হাই-ভোল্টেজ ম্যাচের সম্ভাবনা রয়েছে। ক্রিকেট পাকিস্তানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ম্যাচগুলোর বিশাল দর্শকপ্রিয়তার কারণেই সনি ইন্ডিয়া এত উচ্চমূল্য দাবি করছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ক্রিকেট বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দর্শক টানে, এবং এর বাণিজ্যিক মূল্য অপরিসীম। তবে, পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য এই দাম বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পাকিস্তানের টিভি চ্যানেলগুলো একটি কনসোর্টিয়াম গঠনের পরিকল্পনা করছে। এই কৌশলের মাধ্যমে তারা খরচ ভাগাভাগি করে সনির দাবি মেটাতে পারে। কনসোর্টিয়াম গঠন না হলে, ফি কমানোর জন্য দর কষাকষি অব্যাহত থাকবে। পাকিস্তানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, তিনটি শীর্ষস্থানীয় চ্যানেল এই আলোচনায় রয়েছে, তবে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
এদিকে, এশিয়া কাপের ডিজিটাল রাইটস পাকিস্তানে ইতোমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার কথা। সম্প্রতি বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজে রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল দীর্ঘদিন পর সম্প্রচার থেকে লাভ করেছে, যা চ্যানেলগুলোর জন্য কিছুটা ইতিবাচক সংকেত। তবে এশিয়া কাপের মতো বড় আয়োজনের জন্য এখনো বড় বিনিয়োগের ঝুঁকি রয়ে গেছে।
যদি কোনো পাকিস্তানি চ্যানেল এই বিপুল অঙ্ক খরচ করতে না পারে, তবে দেশটির ক্রিকেটপ্রেমীরা এশিয়া কাপের সরাসরি সম্প্রচার থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।