images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

আচমকা বন্ধ রোহিত শর্মার অ্যাকাডেমি, টাকা ফেরতের দাবি

স্পোর্টস ডেস্ক

০৯ জুলাই ২০২৫, ০২:২২ পিএম

দুবাইয়ে চালু হওয়ার সময় যেটিকে ভবিষ্যতের তারকা ক্রিকেটার গড়ে তোলার অন্যতম ঠিকানা বলা হচ্ছিল, সেই রোহিত শর্মা ক্রিকেট একাডেমি এক বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। সাথে রেখে গেছে অসংখ্য প্রতিশ্রুতি ভাঙার গল্প, বেতন না পাওয়া কোচদের হাহাকার আর হতাশ অভিভাবকদের অভিযোগ।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ‘ক্রিককিংডম বাই রোহিত শর্মা’ ব্র্যান্ডের অধীনে যাত্রা শুরু করেছিল এই একাডেমি। মূলত ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার নামকে সামনে রেখে প্রচারণা চালানো হয়। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামসহ নানা মাধ্যমে রোহিতের ছবি ব্যবহার করে প্রচার চালানো হয়েছিল, এমনকি একাডেমিটিকে উপস্থাপন করা হয়েছিল ‘বিশ্বমানের ট্রেনিং সেন্টার’ হিসেবে। সেই আশায় ৩৫টির বেশি পরিবার আগাম টাকা দিয়ে সন্তানদের ভর্তি করান।

কিন্তু ২০২৫ সালের শুরুর দিকেই সবকিছু বদলে যেতে থাকে। প্রশিক্ষণ অনিয়মিত হতে থাকে, যোগাযোগও কমে যায়। মে মাসের মাঝামাঝি একাডেমির কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ২৮ মে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো এক মেসেজে অভিভাবকদের জানানো হয়, গ্রাসপোর্ট আর একাডেমি চালাবে না, বাকি ক্লাসগুলোর রিফান্ডও তারাই দেবে। তবে এখনো কেউ টাকাই ফেরত পাননি। 

এই সংকট সবচেয়ে কঠিনভাবে আঘাত করেছে একাডেমির কোচদের ওপর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) স্বীকৃত বেশ কয়েকজন কোচ, এমনকি সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটাররাও অভিযোগ করেছেন, এপ্রিল বা মে থেকে তাঁরা কোনো বেতন পাননি।

সহকারী কোচ তিরান সন্দুন উইজেসুরিয়া বলেন, "ভাড়ার টাকা নেই আমার কাছে। বাড়িওয়ালা আমাকে বাড়ি ছাড়তে বলছে। মে থেকে এক টাকাও পাইনি, শুধু আশ্বাস আর আশ্বাস।" সাবেক শ্রীলঙ্কান নারী ক্রিকেটার চামানি সেনেবীরত্নে বলেন, "শুরু থেকেই বেতন নিয়ে সমস্যা ছিল। কখনো দেরিতে, কখনো আংশিক। মে মাসের পর থেকে কিছুই পাইনি।" আরেক সহকারী কোচ, সার্বিয়া ও নাইজেরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা আয়ো মেনে এজেগি বলেন, "এখন কিছু পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছি। মুখে অনেক কথা, কিন্তু কাজের বেলায় কিছুই না।"

সমস্যার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একাডেমি পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাসপোর্ট। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা সুহাস পুডোতা দুবাইয়ে উচ্চাশা নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও বাজেট ও পরিকল্পনার অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে প্রকল্পটি। খালিজ টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, একাডেমির মাসিক ভাড়া ছিল ৫০ হাজার দিরহাম, যা বহন করা সম্ভব হয়নি।

এপ্রিলে তিনি দুবাই ছেড়ে চলে যান। এরপর ৩০ জুন 'ক্রিককিংডম' গ্রাসপোর্টের সাথে তাদের চুক্তি বাতিল করে। তাদের দাবি, বারবার অনুরোধ করেও অক্টোবর ২০২৪ সালের একটি ইনভয়েসের বিল পরিশোধ করা হয়নি। উপরন্তু, রোহিত শর্মার নাম ও ছবি বেআইনিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। ক্রিককিংডম সিইও চেতন সূর্যবংশী বলেন, "ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম, তারপর জানুয়ারি, এরপর মার্চ। তবুও কোনো অগ্রগতি ছিল না। মার্চেই অভ্যন্তরীণভাবে আমরা একাডেমি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিই।"