স্পোর্টস ডেস্ক
০৭ জুলাই ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
আইসিসির জুন মাসের সেরা পুরুষ ক্রিকেটার নির্বাচনের জন্য তিনজনকে মনোনীত করা হয়েছে। এই তালিকায় আছেন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা দক্ষিণ আফ্রিকার দুই তারকাএইডেন মার্করাম ও কাগিসো রাবাডা, সঙ্গে আছেন ধারাবাহিক ব্যাটিংয়ে নজর কাড়া শ্রীলঙ্কান ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কা।
আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে বল ও ব্যাট দুই হাতেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার মার্করাম। প্রথমে বল হাতে নামেন, যখন স্টিভ স্মিথ ও বো ওয়েবস্টার দৃঢ় জুটি গড়ছিলেন। নিজের মাত্র ছয় নম্বর বলেই তুলে নেন স্মিথের উইকেট।
ব্যাট হাতে প্রথম ইনিংসে মিচেল স্টার্কের বলে শূন্য রানে ফিরলেও দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়া ব্যাটিং। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ৭৪ রানে পিছিয়ে। এরপরও মিচেল স্টার্ক ও হ্যাজলউডের দশম উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ হলে দক্ষিণ আফ্রিকার লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৮১ রান। এই কঠিন সময়ে ব্যাট হাতে সামনে আসেন মার্করাম। উইয়ান মুলডার ও টেম্বা বাভুমার সঙ্গে গড়েন গুরুত্বপূর্ণ জুটি। বাভুমা চোট পেয়েও খেলতে চেয়েছিলেন, তখন ড্রেসিংরুমে মার্করাম তাকে সাহস দেন: “আমি আছি, তুমি শুধু পাশে থাকো।”
শেষ পর্যন্ত ১৩৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলে দলকে জেতানোর ভিত গড়ে দেন। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এটি ছিল প্রথম আইসিসি সিনিয়র পুরুষদের ট্রফি জয়।
কাগিসো রাবাডা (দক্ষিণ আফ্রিকা)
চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে বল হাতে নিরলস লড়াই চালিয়ে যান রাবাডা। মোট ৩৩.৪ ওভার বল করে মাত্র ১১০ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। এর ফলে তিনি প্রোটিয়াদের ইতিহাসে অ্যালান ডোনাল্ডকে ছাড়িয়ে যান টেস্ট উইকেটের তালিকায়। প্রথম দিনেই মেঘলা কন্ডিশনে উসমান খাজার উইকেট তুলে নেন। এরপর টানা চারটি উইকেট নিয়ে তুলে নেন নিজের ১৭তম পাঁচ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ১৩৮ রানেই গুটিয়ে যায়। তবুও রাবাডা আবার ঝাঁপিয়ে পড়েন। এক ওভারেই ফেরান খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনকে। এরপর তুলে নেন কেয়ারি ও লায়নের উইকেটও। দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয়, আর রাবাডা শেষ করেন টেস্টে ৩৩৬ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হিসেবে।
পাথুম নিসাঙ্কা (শ্রীলঙ্কা)
নতুন টেস্ট চক্রে দুর্দান্ত সূচনা করেছেন পাথুম নিসাঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা দুটি সেঞ্চুরি করে সিরিজ জেতায় রেখেছেন বড় ভূমিকা। প্রথম টেস্টে গলেতে যখন বাংলাদেশ ৪৯৫ রান তোলে, তখন নিসাঙ্কা করেন ক্যারিয়ার সেরা ১৮৭ রান, যাতে ছিল ২৪টি চার ও একটি ছয়। ইনিংসটি ছিল শ্রীলঙ্কার একমাত্র শতক, যেটি দলকে জয়ের লক্ষ্যের খুব কাছাকাছি পৌঁছে দেয়।
দ্বিতীয় ইনিংসে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ব্যাটিং করে করেন লড়াকু ২৪ রান, তাতে ম্যাচ ড্র করতে সহায়তা করেন। দ্বিতীয় টেস্টে আরও একবার সেঞ্চুরি। স্পিন সহায়ক উইকেটে যখন বাংলাদেশ অলআউট ২৪৭ রানে, তখন নিসাঙ্কা করেন ১৫৮ রান। তাঁর ব্যাটেই শ্রীলঙ্কা পায় ২১১ রানের বড় লিড। শেষ পর্যন্ত এই ইনিংসই ম্যাচ গড়ায় জয় পর্যন্ত, এক ইনিংস ও ৭৮ রানে ম্যাচ জেতে শ্রীলঙ্কা।
এই তিনজনের মধ্যে কে হবেন জুন মাসের সেরা ক্রিকেটার, তা নির্ধারণ করবে ভক্তদের ভোট এবং আইসিসি প্যানেলের রায়। তবে এক মাসেই এমন পারফরম্যান্স- এদের সবাইই এর যোগ্য দাবিদার।