images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

অস্ট্রেলিয়ার মান বাঁচাল ক্যারি-ওয়েবস্টার জুটি

স্পোর্টস ডেস্ক

০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম

গ্রেনাডায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিন দেখা গেল পরিচিত দৃশ্য। ব্যর্থ হলো অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার, আবারও উদ্ধারকর্তার ভূমিকায় নামলেন বো ওয়েবস্টার ও অ্যালেক্স ক্যারি। তবে শেষ পর্যন্ত উইন্ডিজ বোলারদের দাপটে ৬৭ ওভারের মধ্যেই ২৮৬ রানে অলআউট হয়ে যায় অজিরা। ৪ উইকেট নিয়েছেন আলজারি জোসেফ। দিন শেষে আলো স্বল্পতার কারণে মাঠে ফিরেও বল করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া, যা কিছুটা স্বস্তি এনে দেয় স্বাগতিক শিবিরে।

অস্ট্রেলিয়া যখন ১১০ রানে ৫ উইকেট হারায়, তখন মনে হচ্ছিল খুব অল্পতেই গুটিয়ে যাবে। তবে ষষ্ঠ উইকেটে ২৫ ওভারে ১১২ রানের জুটি গড়ে লড়াইয়ে ফেরান ওয়েবস্টার ও ক্যারি। সেখান থেকেই আবার ধীরে ধীরে ভাঙে নিচের সারি।

টস জিতলে ব্যাটিং নয়, বোলিংই নিতেন বলে জানিয়েছেন উইন্ডিজ অলরাউন্ডার রোস্টন চেজ। কারণ, উইকেটে ছিল কিছুটা বাউন্স ও সিমারদের সহায়তা। বিশেষ করে প্যাট কামিন্সকে বোল্ড করা বলটি ইঙ্গিত দিচ্ছিল পরবর্তী সময়ে অসমান বাউন্স হতে পারে।

ওয়েবস্টার ৮৭ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। বার্বাডোজে দ্বিতীয় ইনিংসে তার গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের ধারাবাহিকতা এখানে আরও বড় রূপ নেয়। চেজকে ছয় মেরে, সিলসকে দুর্দান্ত কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলছিলেন। কিন্তু ইনিংসটা থামল দুর্ভাগ্যজনকভাবে- স্ট্রাইক ধরে রাখতে গিয়ে দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে কেসি কার্টির থ্রোয়ে রান আউট।

ক্যারির ইনিংসটাও ছিল রোমাঞ্চকর। তাকে অন্তত দুবার রান আউট করা যেত- ১০ ও ৫১ রানে। ৪৬ রানে একবার ক্যাচও ফেলেন শাই হোপ। ৬৮ বলে হাফসেঞ্চুরি আসে একটি এজড শটে, যা কিপার ও স্লিপের মাঝ দিয়ে গিয়েছিল। এরপর আবার ৫৫ রানে স্লিপের পাশ দিয়ে যায় আরেকটি বল। তবে অফ ফর্মের মধ্যেও তিনি ৬৩ রানের ইনিংসে ৪৬ রানই নেন বাউন্ডারি থেকে। গ্রিভসকে পুল করে ছক্কা মারার পর আবার সেই বোলারের হাফ ভলি তুলে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মিডউইকেটে।

এর আগে ওপেনার স্যাম কনস্টাস আগের ম্যাচের চেয়ে কিছুটা আক্রমণাত্মক ছিলেন। শুরুতে একটি ভালো পুল শট খেলার পর বেশ কয়েকবার পরাস্ত হন সিলসের বলে। তিনবার টানা একই ওভারে ব্যাট মিস করেন তিনি। একবার তো চেজ আঙুল ছুঁয়ে ফেলেও দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন।

উসমান খাজার সঙ্গে ৪৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন কনস্টাস। ২ রান করে খাওয়াজা পৌঁছান ৬০০০ টেস্ট রানে। কিন্তু এরপরই ছন্দপতন। আলজারি জোসেফের বল ডিআরএসে বেল-টাচ করে খাজাকে ফেরায়। পরের ওভারে ফিলিপের বলে কনস্টাস আউট হন ২৫ রানে। দ্রুত আরও একটি উইকেট হারায় অজিরা। ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা স্টিভেন স্মিথ টপ এজড করে ধরা পড়েন ফাইন লেগে। তখন স্কোরবোর্ডে ৫০ রানে ৩ উইকেট।

প্রথম সেশনের শেষ ওভারে নাটকীয়তা বাড়ান সিলস। ক্যামেরন গ্রিন তখন ভালো খেলছিলেন, ১৬ রানে একবার রান আউট হতে হতে বেঁচে যান। এরপর কভার ড্রাইভে ক্যাচ তুললে জন ক্যাম্পবেল সহজ ক্যাচ ফেলেন। তবে শেষ বলে গ্রিন বড় শট খেলতে গিয়ে গালিতে চেজের হাতে ধরা পড়েন। দ্বিতীয় সেশনে যখন মনে হচ্ছিল হেড উদ্ধার করবেন, তখনই বৃষ্টির কারণে কিছু সময় খেলা বন্ধ থাকে। ফেরার পর আবার আলোচনায় তৃতীয় আম্পায়ার। হেডের ক্যাচ নিয়ে হোপের দাবি সঠিক ছিল। আগের ম্যাচে এমন একটি সিদ্ধান্ত তাদের বিপক্ষে গেলেও এবার নিতিন মেনন দেন হোপের পক্ষেই। হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়েন হেড।

অস্ট্রেলিয়া আবারও বিপদে পড়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ওয়েবস্টার-ক্যারি যথেষ্ট রান তুলে ফেলেন যাতে বোলারদের জন্য কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি তৈরি হয়। এখন দেখার, এই স্কোর উইন্ডিজের বিপক্ষে কতটা যথেষ্ট হয়।