স্পোর্টস ডেস্ক
১৬ জুন ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম
অবসরে যাচ্ছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। শেষ টেস্ট খেলতে নামার আগেই অবশ্য ভেতরের হতাশা আর ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। বললেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড বাদে বাকি দলগুলো যেন টেস্ট ক্রিকেটে উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।
২০২৫ সালে শ্রীলঙ্কা খেলবে মাত্র চারটি টেস্ট ম্যাচ। ২০১৩ সালের পর যা সবচেয়ে কম (করোনাকবলিত ২০২০ বাদে)। আর ২০২৩-২৫ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) চক্রের চিত্র আরও হতাশাজনক। আগের চক্রে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড প্রত্যেকেই খেলেছিল অন্তত ১৯টি করে টেস্ট। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন সাউথ আফ্রিকা খেলেছিল মাত্র ১৩টি।
নতুন ডব্লিউটিসি চক্রে অস্ট্রেলিয়া খেলবে ২২টি, ইংল্যান্ড ২১টি এবং ভারত ১৮টি টেস্ট। অথচ শ্রীলঙ্কা খেলবে আগের চেয়েও কম, মোট ১২টি, ছয়টি দুই ম্যাচের সিরিজে।সংখ্যাটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিলেই সর্বনিম্ন। তবে এতো কম টেস্ট খেলা হতাশার বলেই জানিয়েছেন ম্যাথিউস। "সত্যি বলতে, এটা খুবই হতাশার," বলেন ম্যাথিউস। "নতুন প্রজন্ম টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চায়। এই ফরম্যাটই আসল ক্রিকেট। আমাদের টেস্ট ম্যাচ বাড়ানোর দাবি তোলা উচিত। এই ছেলেরা টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভীষণ আগ্রহী।"
"আমি মনে করি, বছরে অন্তত ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলানো উচিত। ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া বছরে ১৫টির বেশি খেলছে, আমরা কেন পারবো না? পারি। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ জিতেছে, ক্রিকেটে অনেক অবদান রেখেছে। আমরাও সমান সুযোগ পাওয়ার যোগ্য," বললেন ম্যাথিউস। ম্যাথিউসের এই অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগে একই কথা বলেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক ধনাঞ্জয় ডি সিলভাও। তবে ১১৮ টেস্ট খেলা একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কণ্ঠে যখন একই সুর, তখন গুরুত্বটা আরও বেড়ে যায়। কারণ, ভবিষ্যতে কজন শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড় এই সংখ্যার টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে?
টেস্ট থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্তে ম্যাচ কমে যাওয়ার প্রভাবও ছিল, সেটা অকপটে বলেই দিলেন ৩৮ বছর বয়সী এই তারকা। "আমার ১০০তম টেস্ট ছিল গলে। তাই মনে হয়েছিল সেখান থেকেই বিদায় জানাই। তবে আসল কারণ হচ্ছে সামনে আর কোনো টেস্ট নেই। এক বছরের মতো বিরতি পড়ে যাবে। এত লম্বা গ্যাপ থাকলে তো ছন্দ ধরে রাখা বা সুযোগ পাওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়ে," বললেন ম্যাথিউস।
"তাই আমি ভাবলাম, এক ম্যাচ খেলি, এরপর যিনি আমার জায়গায় আসবেন তাকে দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ দিই। কারণ ওই একজন ম্যাচ খেলতে হলেও, তার পরের সুযোগটা আসবে এক বছর পর! তত দিনে কে কোথায় থাকবে, সেটাও তো নিশ্চিত না।" অবসরের সিদ্ধান্তটা আবেগের হলেও, বাস্তব পরিস্থিতিই যেন ম্যাথিউসকে তাড়িয়ে দিয়েছে এই সিদ্ধান্ত নিতে। টেস্ট ক্রিকেটের এমন দুঃসময়ে, তাঁর কণ্ঠে ভেসে উঠেছে লাল বলের ক্রিকেট বাঁচানোর আহ্বান।