স্পোর্টস ডেস্ক
১২ জুন ২০২৫, ০৬:০০ পিএম
রবার্ট লেভানদোভস্কি, যিনি শুধু পোল্যান্ডের ফুটবল নয়, গোটা দেশের গর্ব। সর্বোচ্চ গোলদাতা, একাধারে নেতা, অনুপ্রেরণা, আইডল। কিন্তু যখন সেই রত্নের সঙ্গেই দূরত্ব তৈরি হয় কোচের, তখন বোঝাই যায়, দলটার ভেতর কোথাও একটা ফাটল ধরেছে। এবং সেটি যখন প্রকাশ্য হয়ে যায়, তখন তার সমাপ্তিও হয় নাটকীয়ভাবে।
পোল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের কোচ মিচাল প্রোবিয়েৎস শেষমেশ সরে দাঁড়ালেন। অধিনায়কত্ব ঘিরে তৈরি হওয়া দ্বন্দ্বে আর না গিয়ে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পথ বেছে নিলেন তিনি। 'বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় দলের কোচের পদ ছেড়ে দেওয়াই দলের জন্য ভালো সিদ্ধান্ত,' খুব সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর বার্তা দিয়েছেন ৫২ বছর বয়সী এই কোচ।
প্রোবিয়েৎস দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০২৩ সালে। তার কোচিংয়ে পোল্যান্ড ২১টি ম্যাচ খেলে ৯টি জয়, ৭টি ড্র আর ৫টি হার। এই পরিসংখ্যান বলছে, তিনি খুব খারাপ কোচ ছিলেন না। কিন্তু মাঠের বাইরে সম্পর্কের টানাপোড়েনই হয়ে উঠল তার কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
সমস্যার শুরু অধিনায়কত্ব ঘিরে। হুট করেই বার্সেলোনার তারকা ফরোয়ার্ড রবার্ট লেভানদোভস্কির কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয় দলের আর্মব্যান্ড। নতুন অধিনায়ক করা হয় পিওতর জিয়েলিনস্কিকে। এতেই চটে যান লেভা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি জানিয়ে দেন, কোচের অধীনে আর খেলবেন না তিনি।
'আমি যত দিন কোচ থাকবেন, তত দিন খেলব না,' এক্সে (পূর্বের টুইটার) লেখা লেভার এই বক্তব্য চুম্বকের মতো টেনে নেয় ক্রীড়ামাধ্যমগুলোকে। কোচের ওপর আস্থাহীনতা, দলীয় নেতার সাথে মনোমালিন্য সব মিলিয়ে এটি হয়ে ওঠে একটি জাতীয় ইস্যু।
যে কোনো দলেই কোচের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অধিনায়ক কে হবেন, সেটা ঠিক করা কোচ বা ফেডারেশনের দায়িত্ব। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কিছু খেলোয়াড়ের ভূমিকা মাঠের বাইরেও এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়, যে তাদের উপেক্ষা করলেই দল অস্থির হয়ে পড়ে। লেভানদোভস্কি তেমনই একজন।
একদিকে কোচের সিদ্ধান্ত, অন্যদিকে দেশের ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় তারকার অভিমান। এমন পরিস্থিতিতে পোল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়নকেও চাপ নিতে হয়। ইউরো ২০২৫ সামনে, সেখানে লেভানদোভস্কিকে ছাড়া মাঠে নামা মানে যেন অস্ত্রহীন যুদ্ধে নামা।