images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

নিজের নামে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ, বিশ্বাস হচ্ছে না অ্যান্ডারসনের

স্পোর্টস ডেস্ক

১০ জুন ২০২৫, ০১:১১ পিএম

ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী টেস্ট সিরিজ এবার থেকে নতুন নামে পরিচিত হবে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা 'পাতৌদি ট্রফি'-র পরিবর্তে নতুন নাম হিসেবে 'অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি' নির্ধারণ করা হয়েছে। আর নিজের নাম এমন একটি মর্যাদার সিরিজের সঙ্গে জড়ানোয় গর্বে ভেসে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি পেসার জেমস অ্যান্ডারসন।

ইংল্যান্ডের হেডিংলিতে আগামী ২০ জুন শুরু হতে যাচ্ছে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। তার আগেই ইংল্যান্ড ও ভারতের ক্রিকেট বোর্ড মিলে ঘোষণা দিয়েছে এই ট্রফির নতুন নাম। ট্রফির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন হবে লর্ডসে চলমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের সময়, যেখানে উপস্থিত থাকবেন দুই কিংবদন্তি- অ্যান্ডারসন ও শচীন টেন্ডুলকার।

একটি অনুষ্ঠানে অ্যান্ডারসন বলেন, "এটা আমার জন্য বিশাল সম্মানের ব্যাপার। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। শচীন এমন একজন, যাকে ছোটবেলায় অনুসরণ করতাম। যদিও এটা বললে তার বয়স নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে! আমি তাকে অনেক খেলতে দেখেছি, খেলেছিও তার বিপক্ষে। তার মতো একজন কিংবদন্তির সঙ্গে নিজের নাম একসঙ্গে জুড়ে যাওয়া, এটা সত্যিই গর্বের।"

টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন শচীন টেন্ডুলকার (২০০), তার ধারেকাছেই আছেন অ্যান্ডারসন (১৮৮)। শচীনের ১৫,৯২১ রান এখনও টেস্টের সর্বোচ্চ। অন্যদিকে, অ্যান্ডারসনের ঝুলিতে আছে ৭০৪ উইকেট, যা টেস্টে কোনো পেসারের মধ্যে সর্বোচ্চ। দুজনের ক্যারিয়ার মিলিয়ে সময়ের পরিসর প্রায় ৩৫ বছর! শচীনের টেস্ট অভিষেক ১৯৮৯ সালে, মাত্র ১৬ বছর বয়সে। আর অ্যান্ডারসনের বিদায় ২০২৪ সালে, ৪২ বছর বয়সের প্রাক্কালে। ২০০৬ থেকে ২০১২ পর্যন্ত ১৪টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছেন তারা, যেখানে অ্যান্ডারসন ৯ বার আউট করেছেন শচীনকে।

ভারতের বিপক্ষে অ্যান্ডারসনের রেকর্ডও দুর্দান্ত। ৩৯টি টেস্টে নিয়েছেন ১৪৯টি উইকেট, গড় ২৫.৪৭। ২০০৫-০৬ মৌসুমে মুম্বাইয়ে ঐতিহাসিক জয়ে বড় ভূমিকা ছিল তার, পাশাপাশি ২০১১ ও ২০১২-১৩ সালে ঘরের মাঠ ও ভারত সফরে ব্যাক-টু-ব্যাক সিরিজ জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ওই সিরিজ জয়ের পর ইংল্যান্ড উঠে গিয়েছিল আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।

তবে ভারতের বিপক্ষে পাঁচটি সিরিজেও হেরেছেন তিনি, যার চারটি আবার উপমহাদেশের কন্ডিশনে। ২০২৪ সালের ধারমশালার সফর ছিল তার শেষ বিদেশ সফর, যেখানে টেস্ট ক্যারিয়ারের ৭০০তম উইকেটটি শিকার করেছিলেন তিনি। "ভারতের বিপক্ষে দারুণ কিছু স্মৃতি আছে আমার," বলেন অ্যান্ডারসন। “অ্যাশেজের পর এটিই এমন সিরিজ যা নিয়ে ইংল্যান্ড দল সবসময় রোমাঞ্চিত থাকে। অবশ্যই ভারতে খেলা কঠিন, কিন্তু সেখানে জিতেছি আমরা—সেটা খুবই স্পেশাল মুহূর্ত ছিল। ইংল্যান্ডে তাদের সঙ্গে দারুণ সব লড়াই হয়েছে। ওদের দলে দুর্দান্ত সব খেলোয়াড় ছিল।”

এবারের সিরিজ নিয়েও আশাবাদী অ্যান্ডারসন। তিন বছর আগে ইংল্যান্ড সফরে দুই দলের পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ২-২ তে শেষ হয়েছিল, যদিও শেষ টেস্ট খেলানো হয়েছিল এক বছর পর, কোভিডের কারণে। "এই সিরিজেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, এটা নিশ্চিত," বলেন তিনি। “জানি ভারত এখন একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে—নতুন অধিনায়ক শুবমান গিল, কোহলি-রোহিত নেই। তবুও দলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে। ইংল্যান্ডও নতুন ধরনের ক্রিকেট খেলছে। সব মিলিয়ে জমজমাট এক সিরিজের অপেক্ষায় আছি।”