images

স্পোর্টস / ফুটবল

রোনালদোর গোলে জার্মানিকে বিদায় করে ফাইনালে পর্তুগাল

স্পোর্টস ডেস্ক

০৫ জুন ২০২৫, ১১:০৮ এএম

৪০ বছর বয়সেও গোলের ক্ষুধা কমেনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। জার্মানির বিপক্ষে ফিরিয়ে এনেছেন পর্তুগালকে, আর নিজেও করেছেন রেকর্ড ১৩৭তম আন্তর্জাতিক গোল। তাঁর গোলেই ২-১ ব্যবধানে জয় তুলে নিয়ে নেশনস লিগের ফাইনালে পৌঁছে গেছে পর্তুগাল।

মিউনিখে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে পিছিয়ে পড়েও ম্যাচে ফিরেছে পর্তুগাল। নির্ধারিত সময়ের ৬৮তম মিনিটে নুনো মেন্ডেসের নিচু পাস থেকে ক্লোজ রেঞ্জ থেকে গোল করে জয় নিশ্চিত করেন রোনালদো। এর আগে ৬৩তম মিনিটে ফ্রান্সিসকো কনসেইসাওর দুর্দান্ত গোলে সমতায় ফেরে দলটি। জার্মানির হয়ে ৪৮তম মিনিটে প্রথমে এগিয়ে দিয়েছিলেন ফ্লোরিয়ান ভার্টজ।

২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো নেশনস লিগের শিরোপা জিতেছিল পর্তুগাল। এবার দ্বিতীয় শিরোপার পথে ছিল বাধা জার্মানি। ম্যাচের শুরুতে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। বায়ার লেভারকুজেনের ফরোয়ার্ড ভার্টজ, যার প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলে ১০৯ মিলিয়ন পাউন্ডে যোগ দেওয়ার কথা প্রায় নিশ্চিত, জসুয়া কিমিখের দুর্দান্ত লফটেড পাসে হেডে গোল করেন। কিমিখের জন্য এটি ছিল তার ১০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ।

তবে সেই গোল নিয়ে পর্তুগালের ছিল তীব্র আপত্তি। তাদের দাবি ছিল, জার্মান ডেবিউ করা খেলোয়াড় নিক ওল্টেমাডে রুবেন দিয়াসকে বাধা দিয়েছেন। রেফারিকে ভিএআরের সাহায্যে ঘটনার রিপ্লে দেখার পরামর্শ দেওয়া হলেও গোলটি বহাল থাকে।

৬৩তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় হিসেবে নেমেই ম্যাচে সমতা ফেরান ফ্রান্সিসকো কনসেইসাও। ডান প্রান্ত থেকে বল নিয়ে ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে এক দারুণ কার্লিং শটে জার্মান গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগেনকে পরাস্ত করেন তিনি।

তার পাঁচ মিনিট পরেই আসে রোনালদোর জয়সূচক গোল। কাছ থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে পাস পেয়ে বল জালে পাঠিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রোনালদো। অবশ্য জার্মানির পক্ষেও ম্যাচে ফেরার একটা সুযোগ এসেছিল। করিম আডেয়েমির শট পোস্টে লেগে ফিরে আসায় ম্যাচ গড়ায়নি অতিরিক্ত সময়ে। এদিকে, মিউনিখে রবিবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ফাইনালে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ হবে ফ্রান্স বা স্পেন, যাদের মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে বৃহস্পতিবার, স্টুটগার্টে।

ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা ছিল নির্ধারিত সময়েই, কিন্তু প্রবল শিলাবৃষ্টির কারণে ১০ মিনিট বিলম্বে শুরু হয়। এটি ছিল মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় সপ্তাহের দ্বিতীয় বড় ম্যাচ। এর আগে শনিবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে পিএসজি ৫-০ গোলে ইন্টার মিলানকে হারিয়েছিল এই মাঠেই।

প্রথমার্ধে জার্মানিই বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল। পর্তুগাল গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা লিয়ন গোরেত্জকার একটি দুর্দান্ত শট রুখে দেন এবং স্টুটগার্ট ফরোয়ার্ড ওল্টেমাডের শটও ঠেকান।পর্তুগালের পক্ষে প্রথমার্ধে একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা ছিল রোনালদোর দূর্বল শট। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কনসেইসাও নামার পরপরই বদলে যায় চিত্র। তার উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে পর্তুগাল নিয়ন্ত্রণ নেয় ম্যাচের।

রোনালদো ও কনসেইসাওর গোল ছাড়াও ম্যাচে আরও সুযোগ তৈরি করেছিল পর্তুগাল। ডিয়োগো জোতা ও কনসেইসাওকে চমৎকার দুটি সেভে গোল করতে দেননি টার স্টেগেন। তবে শেষ পর্যন্ত তা কোনো কাজে আসেনি জার্মানির। কারণ, রবার্তো মার্টিনেজের দল পেল তাদের ২০০০ ইউরোর পর প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে জার্মানিকে হারানোর স্বাদ। উল্লেখযোগ্যভাবে, তখন কনসেইসাওর বাবা সার্জিও কনসেইসাও করেছিলেন হ্যাটট্রিক।

এটি নেশনস লিগের চতুর্থ আসর। আগের তিন আসরে পর্তুগাল (২০১৯), ফ্রান্স (২০২১) ও স্পেন (২০২৩) শিরোপা জিতেছিল। এবার আবারও ট্রফির দৌড়ে আছে পর্তুগাল।