স্পোর্টস ডেস্ক
৩১ মে ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম
বাইশ গজে গতি আর আগ্রাসনের প্রতীক ছিলেন শোয়েব আখতার। সেই ‘পিন্ডি এক্সপ্রেস’ অনেক আগেই বুটজোড়া তুলে রেখেছেন, তবে থামেনি তাঁর ব্যতিক্রমী উচ্চারণ আর স্পষ্টবাদিতা। এখন তিনি আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন মাইক্রোফোন হাতে, কখনো টিভি স্টুডিওতে, কখনো ইউটিউব বা ডিজিটাল স্ক্রিনে। তবে এবার তার মুখরোচক মন্তব্যই যেন ডেকে এনেছে বড়সড় ঝামেলা।
সম্প্রতি পাকিস্তানের জনপ্রিয় স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘তামাশা’-তে প্রচারিত একটি টকশোতে অংশ নিয়ে, শোয়েব আখতার এমন এক মন্তব্য করে বসেন যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ২৫ মে সম্প্রচারিত দ্য ডাগআউট নামের সেগমেন্টে, একপর্যায়ে শোয়েব বলেন, ‘এই যে ডক্টর নোমান নিয়াজ, সে তো আমাদের ব্যাগ টানতো। আমরা তাকে ওই কাজের জন্যই রেখেছিলাম।’
এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন ডা. নোমান নিয়াজ। পাকিস্তানের এই খ্যাতনামা ক্রীড়া সাংবাদিক, টেলিভিশন উপস্থাপক এবং সাবেক পিসিবি কর্মকর্তা শোয়েব আখতারের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দাবি করে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, শোয়েব আখতারের এই মন্তব্য ‘অসত্য, বানোয়াট, এবং মানহানিকর’, যার মাধ্যমে ডা. নিয়াজের দীর্ঘ পেশাগত জীবনে অসম্মান আনা হয়েছে। নোটিশে আরও দাবি করা হয়, পাকিস্তানের ক্রিকেট কাঠামোর সঙ্গে জড়িত থেকে, ডা. নিয়াজ উইজডেনসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সাড়ে তিন হাজারের বেশি লেখা প্রকাশ করেছেন। তার পরিচিতি এবং কৃতিত্বকে ব্যাগ বহনকারী তকমায় নামিয়ে আনা একেবারেই অপমানজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে শোয়েব আখতারকে ১৪ দিনের মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দেওয়ারও অনুরোধ করা হয়েছে। শোয়েব যদি এই সময়সীমার মধ্যে কোনো সাড়া না দেন, তবে দ্য ডিফেমেশন অর্ডিন্যান্স ২০০২ অনুযায়ী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
ডা. নিয়াজ ও শোয়েব আখতারের মধ্যে এই প্রথম উত্তেজনা নয়। ২০২১ সালের অক্টোবরে, পিটিভি স্পোর্টসের একটি সরাসরি সম্প্রচারে দুইজনের মধ্যে লাইভ বাকবিতণ্ডা ঘটে। শোয়েব পাকিস্তান সুপার লিগে লাহোর কালান্দার্সের স্কাউটিং সাফল্য নিয়ে কথা বলার সময়, ডা. নিয়াজ তাকে অত্যধিক চালাক বলে মন্তব্য করেন এবং সোজা বলেন, ‘তুমি চাইলে যেতে পারো। আমি লাইভেই বলছি।’
ওই ঘটনাতেই অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে আসেন শোয়েব এবং পরবর্তীতে পিটিভি থেকে পদত্যাগ করেন। পাল্টা হিসেবে পিটিভি তার বিরুদ্ধে ১০ কোটি রুপির ক্ষতিপূরণ দাবি করে। সবকিছুই এখন আইনি পথে গড়াচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত শোয়েব আখতার এই নোটিশ কিংবা বিতর্ক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তামাশার সেই এপিসোড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও, তিনি যেন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন।