স্পোর্টস ডেস্ক
১২ মে ২০২৫, ০৫:০২ পিএম
ইন্টার মিলানের কাছে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালে হতাশাজনক হার। এটাই হয়তো বার্সেলোনার মৌসুমটা ধসিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। গত কয়েক মৌসুমে যেভাবে মাঠের ভেতর ও বাইরে ধুঁকেছে দলটি, তাতে এমন পরিণতি একসময় খুব স্বাভাবিকই মনে হতো। ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে একমাত্র কাপ ট্রফিতে মৌসুম শেষ করাও হতো বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এবার গল্পটা অন্যরকম।
রবিবার ক্লাসিকোতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আবারও ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল বার্সা। শেষ চার ম্যাচে তিনবারই এমনটা হয়েছে। কিন্তু এবার হান্সি ফ্লিকের দল দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রথমার্ধেই ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় তারা, আর ম্যাচ শেষে জয় ৪-৩ ব্যবধানে।
ম্যাচের শেষদিকে রিয়ালের চাপ সামলে নেয়ার পর এখন স্পষ্ট হিসেব, আগামী বৃহস্পতিবার এস্পানিওলের বিপক্ষে জয় পেলেই ২৮তম লিগ শিরোপা নিশ্চিত বার্সেলোনার। তবে তার আগেই যদি বুধবার রিয়াল হেরে যায় মায়োর্কার বিপক্ষে, তাহলে আগেই উৎসব শুরু করতে পারবে কাতালানরা। এক মৌসুমে রিয়ালের বিপক্ষে চারটি ক্লাসিকো জয়, বার্সেলোনার ইতিহাসে এটা মাত্র দ্বিতীয়বার। এটাই প্রমাণ করে, হান্সি ফ্লিক দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে দলটি কতটা বদলে গেছে।
যে দল কিছুদিন আগেও আত্মবিশ্বাসহীন ও পরিচয়হীন ছিল, তারাই এখন খেলছে দারুণ মুগ্ধতা নিয়ে। যদিও কাজটা সহজে করছে না তারা, তবু দারুণ ধারাবাহিক। লামিন ইয়ামাল, পেদ্রি ও পাও কুবারসির মত তরুণদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভবিষ্যতের জন্যও শক্ত ভিত গড়ে ফেলেছে ব্লগরানারা।
রবিবারের ম্যাচের প্রথম দিকে কিছুটা শান্ত থাকলেও এরপর বার্সার আক্রমণভাগ রীতিমতো ছিন্নভিন্ন করে দেয় রিয়ালের রক্ষণভাগ। হাই প্রেসিং আর নিখুঁত ফিনিশিং ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে রক্ষণভাগ এখনও চিন্তার জায়গা কাতালানদের। হাই লাইনে খেলা পছন্দ করলেও, সেই জায়গায় উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফ্লিক।
তিনি বলেন, “গত বছর থেকে যে যাত্রা শুরু করেছি, সেটা এখনও শেষ হয়নি। রক্ষণে আমাদের অনেক কিছু ঠিক করতে হবে। এটা শুধু ব্যাকফোরের ব্যাপার না। আমরা ভুল করলে রিয়ালের মতো দলে তো সুযোগ নিয়েই নেয়।”
মোভিস্টার প্লাসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়ামাল বলেন, “আজ জেতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগের পর এমন ম্যাচ পাওয়া আমাদের জন্য ভালো হলো। এখন ওই হারটা ভুলেই গেছি। কষ্ট থেকেই শক্তি আসে, আর ভুলগুলো ঠিক করতে শেখা যায়। এটা কঠিন বছর ছিল, নিজেদের স্টেডিয়ামেও খেলতে পারিনি আমরা। শেষে আমি মাকে বলেছিলাম, চ্যাম্পিয়নস লিগ তো প্রতিবছরই আসে। আমরা আবার চেষ্টা করব।”
তিনি আরও বলেন, “আজ জেতাটা খুব দরকার ছিল লিগ শিরোপার দিকে এগিয়ে যেতে। আমরা দারুণ খুশি।”
এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচ বাকি থাকতেই দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়ালের চেয়ে সাত পয়েন্ট এগিয়ে গেছে বার্সা। অর্থাৎ, শিরোপা এখন একেবারেই হাতের নাগালে।