স্পোর্টস ডেস্ক
০৯ মে ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
ইউরোপা লিগের সেমিফিনালের প্রথম লেগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও টটেনহাম- এ দুই দলই পেয়েছিল বড় জয়ের দেখা। দ্বিতীয় লেগেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে দুই দলই। অথচ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এ দুই দলই কাটাচ্ছে ভুলে যাওয়ার মত এক মৌসুম। লিগ টেবিলে ১৫ নম্বরে আছে ম্যানইউ, আর স্পার্সরা আছে আরও এক ধাপ নিচে, ষোলোতে। দুই দলের সামনেই অবনমনের শঙ্কা। তবে শেষ পর্যন্ত মৌসুমের শেষদিকে এসে জ্বলে ওঠেছে একটি আশার আলো।
সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে গতকাল অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ইউনাইটেড। দীর্ঘ ২০ মাসের হতাশা কাটিয়ে জ্বলে উঠলেন মেসন মাউন্ট। দ্বিতীয়ার্ধে তার দুর্দান্ত জোড়া গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পৌঁছে গেল ইউরোপা লিগের ফাইনালে, যেখানে প্রতিপক্ষ আরেক ইংলিশ ক্লাব টটেনহ্যাম। ২১ মে, স্পেনের বিলবাওতে বসবে এই মর্যাদার লড়াই। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ঘরের মাঠে অবশ্য রাতটা সহজ ছিল না ইউনাইটেডের জন্য। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে তিন গোলের সুবিধা নিয়ে নামলেও খেলার শুরু থেকেই ছিল ভুলের ছড়াছড়ি, টেনশন আর অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে গ্যালারির দর্শকরা যেন নিঃশ্বাস আটকে বসে ছিলেন।
চেলসি থেকে ৫৫ মিলিয়ন পাউন্ডে ম্যানইউতে আসার পর থেকেই ইনজুরিতে ভুগছিলেন মাউন্ট। ইংলিশ মিডফিল্ডার প্রিমিয়ার লিগে খেলতে পেরেছে কেবল ১০ ম্যাচ। তবে প্রয়োজনের সময়ে ঠিকই জ্বলে ওঠেছেন তিনি। বৃহস্পতিবারের ম্যাচে বদলি হিসেবে নেমে মাত্র ১০ মিনিট পরই লেনি ইয়রোর ভুল পাস কাজে লাগান মাউন্ট।
বক্সের ভেতর থেকে কোনাকুনি শটে বল পাঠান পোস্টের এক কোণে। সেটাই ছিল ইউনাইটেডের জার্সিতে তার তৃতীয় গোল, তবে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই গোলে শেষ হয়ে যায় সেই শঙ্কা, যে ইউরোপা লিগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কেউ হয়তো তিন গোলে পিছিয়ে থেকেও ফিরবে অ্যাওয়ে ম্যাচে—১৩৪ ম্যাচে যা কখনো হয়নি।
তবে তখনও বাকি ছিল নাটকের দ্বিতীয় পর্ব। ক্যাসেমিরো আর রাসমুস হয়লুনের গোলে যখন ইউনাইটেড দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আবার আলো ছড়ান মাউন্ট। মাঝমাঠে প্রায় ৪৫ গজ দূর থেকে লুজ বল পেয়ে অসাধারণ এক শটে বল জড়ান ফাঁকা জালে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এ এক স্মরণীয় রাত। এই জয়ে ইউনাইটেড অব্যাহত রাখল ইউরোপা লিগে নিজেদের অপরাজিত রেকর্ড। স্প্যানিশ ক্লাব বিলবাও যদিও ম্যাচের বেশিরভাগ সময় ভালো খেলেছে। প্রথমার্ধে তারা এগিয়ে যায় মিকেল জাউরেগিজারের দুর্দান্ত ৩০ গজের শটে। কিন্তু তাতে শেষ পর্যন্ত পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে কেবল।
ম্যাচ শেষে ইউনাইটেড সমর্থকদের উল্লাসে ছিল কেবল একটাই স্বস্তি, এই ম্যাচে জয় দিয়ে তারা যেন একটা ব্যর্থ মৌসুমেও আশার আলো খুঁজে পেল। আর ফাইনালে মুখোমুখি এবার তাদেরই মতো আরেক ইংলিশ ক্লাব, যারা এ মৌসুমে কম সমালোচনার মুখে পড়েনি, টটেনহ্যাম হটস্পার।
এদিকে টটেনহাম প্রথম লেগে ৩–১ গোলের বড় জয়ের পর গতকাল বোডো/গ্লিমটের বিপক্ষে ম্যাচটি স্পার্সরা জিতে নিয়েছে ২-০ গোলে। দুই লেগ মিলয়ে ৫-১ গোলের বড় জয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করেছে টটেনহাম।