স্পোর্টস ডেস্ক
২৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন মানদণ্ড তৈরি করে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছেন রাজস্থান রয়্যালসের ১৪ বছর বয়সী বিস্ময় প্রতিভা বৈভব সূর্যবংশী। আইপিএলের ১৮তম আসরে সোমবার গুজরাট টাইটান্সের দেওয়া ২১০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ‘পিঙ্ক সিটি’ জয়পুরে নিজের ব্যাটে রীতিমতো ঝড় তোলেন এই কিশোর।
ছক্কা-চারে সাজানো ইনিংসে পুরো গ্যালারিতে ‘পিঙ্ক ওয়েভ’ বইয়ে দেন তিনি। দর্শকদের মোহিত করে যখন খেলছিলেন, তখন অপর প্রান্তে যশস্বী জয়সওয়াল যেন শুধুই একজন দর্শক। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে বৈভব ভেঙে দেন আইপিএলে কোনো ভারতীয় ব্যাটারের করা সবচেয়ে দ্রুত সেঞ্চুরির রেকর্ড। এই বয়সেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে।
তবে বৈভবের সাফল্যের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ সংগ্রামের গল্প। ম্যাচ শেষে আইপিএলের অফিসিয়াল এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে দেওয়া ভিডিওতে বৈভব জানান, তার এই সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব তিনি দেন মা-বাবাকে।
“আজ আমি যা হয়েছি, তা শুধুই আমার মা-বাবার কারণে। প্রতিদিন সকাল সকাল আমার প্র্যাকটিস থাকত, মা তখন তিন ঘণ্টা ঘুমিয়ে উঠে আমার জন্য খাবার রান্না করতেন। বাবা নিজের কাজ ছেড়ে দিয়ে আমার খেলায় সময় দিয়েছেন, এখন সেটা বড় ভাই সামলাচ্ছে। আমরা তখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। তবু বাবা আমাকে বলেছিলেন, আমি পারব। আজকের এই সাফল্য, চোখে দেখা ফল, সবই তাদের জন্য,” বলেন বৈভব।
এই ম্যাচেই প্রথম বলেই বৈভব নিজের ইনিংস শুরু করেন ৯০ মিটারের বিশাল এক ছক্কা দিয়ে, সেটাও আবার লং অন দিয়ে। সূর্যবংশীর এমন মারকুটে ব্যাটিং দেশে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের ক্রিকেটাররাও।
এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। গুজরাটের বোলার সিরাজ খুঁজে পাচ্ছিলেন না কোনো উত্তর, রাশিদ খানের স্পিন ও জাদু ধুলোয় মিশে যায়, আর গুজরাটের থিংক ট্যাংক কিছুতেই খুঁজে পায় না বৈভবকে থামানোর পথ।
গুজরাট টাইটান্স যখন কোনো সমাধান খুঁজে পাচ্ছিল না, তখন ম্যাচ পুরোপুরি চলে যায় রাজস্থানের নিয়ন্ত্রণে। শেষ পর্যন্ত প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর এক জোরালো ইয়র্কারই থামাতে পারে বৈভবের ৩৮ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। তবে ততক্ষণে যা হবার হয়ে গেছে, ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় রাজস্থান রয়্যালস।
১৪ বছর বয়সেই এমন ঝড় তুলে শুধু ম্যাচ জেতাননি বৈভব সূর্যবংশী, মনে করিয়ে দিয়েছেন যে সঠিক সময়, সঠিক সমর্থন আর দৃঢ় মনোভাব থাকলে বয়স কোনো বাধা নয়।