স্পোর্টস ডেস্ক
১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম
রাফয়েল নাদাল যুগের শেষ দেখতে যাচ্ছে টেনিস। চলতি মৌসুম শেষ করে অবসরে যাবেন এই কিংবদন্তি আগেই জানিয়েছিলেন স্প্যানিশ টেনিস তারকা।। ২২ বারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী এই তারকাকে শেষবারের মতো টেনিস কোটে দেখা যাবে চলতি মাসের এই ডেভিস কাপে। টুর্নামেন্টে নিজ দেশ স্পেনকে প্রতিনিধিত্ব করবেন ৩৮ বছর বয়সী এই টেনিস তারকা। সেই অনুযায়ী নাদালের সেই শেষের ম্যাচ এই শুরুটা হচ্ছে আজ।
ডেভিস কাপের ডাবলস কোয়ার্টার ফাইনালে আজ রাতে সেপনের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। তবে এই ম্যাচে নাদালের খেলা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চিয়তা। কেননা গত জুলাইয়ে অলিম্পিকে বাদ পড়ার পর আর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেননি নাদাল। ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে শুধু অনুশীলনের মধ্যে ছিলেন। নাদালের সঙ্গে সেপনের স্কোয়াডে আছেন কার্লোস আলকারাজ, রবার্তো বাতিস্তা, পেদ্রো মার্তিনেস ও মার্সেল গ্রানোলার্স। শেষ পর্যন্ত কোন দুই জন খেলবেন তা ম্যাচের আগে ফিটনেস নিবে ম্যানেজমেন্ট!
বিদায়ের আগে সংবাদ সম্মেলনে এসে আবেগাপ্লুত নাদাল বলেছেন, ‘এখানে আমি অবসরের আনুষ্ঠানিকতা সারতে আসিনি, দলকে সাহায্য করতে এসেছি। হ্যাঁ, এটাই আমার পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ সপ্তাহ। কিন্তু দিন শেষে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে এসেছি। শেষ বেলায় আমার আবেগও কাজ করছে।’
২২ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী তারকার বিদায়ের ক্ষণ ছুঁয়ে গেছে এক সময়ের প্রতিদ্বন্দ্বী ২০ বারের গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী ফেদেরারকে। এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘রাফা, তুমি যখন তৈরি হচ্ছ টেনিস থেকে গ্র্যাজুয়েট হতে, আমি কিছু শেয়ার করতে চাই, যেটা আবেগঘনও হতে পারে। তুমি আমাকে অনেকবার হারিয়েছ, যতবার তোমায় হারিয়েছি তার থেকেও বেশি। আমার খেলায় তুমি এত প্রভাব ফেলেছো, যে কখনও মনে হত ক্লে কোর্টে একটু তোমার পিছনে পাঠাতে পেরেছি, পরক্ষণেই আমায় খেলা বদলাতে হত। এমনকি আমার টেনিস ব্যাট হেডের সাইজ বদলাতে হয়েছে, যদি কোনও টাচ লাগে।’
‘আমি খুব একটা কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ নয়, কিন্তু তুমি সেটাকে অন্য পর্যায় নিয়ে গেছ। সব ধরণের বিষয় যেগুলো তুমি মানতে যেমন জলের বোতল গুলোকে সাজিয়ে রাখা, চুল ঠিক করা। সব কিছু তুমি লুকিয়েই করতে, বিষয়টা সকলের কাছেই অবাক করার মতো। তবে আমি বিষয়টা ভালোবাসতাম। তুমি না আমায় খেলাটা আরও বেশি করে উপভোগ করিয়েছো। যখন আমি ২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতলাম, আমি ১ নম্বর হলাম। এরপর সেই স্থানেই ছিলাম। কিন্তু মিয়ামি একটা লাল হাত কাটা গেঞ্জি পড়ে তুমি ঢুকলে, আর আমায় সহজেই হারিয়ে দিলে, তখন থেকেই বুঝলাম যে মায়োর্কার ছেলেটা কিছু করে দেখাবে।’
‘১৪টা ফরাসি ওপেন জিতে তুমি তোমার দেশ স্পেনকে গর্বিত করেছো। একই সঙ্গে গোটা টেনিস বিশ্বকেও গর্বিত করেছ। আমি আমাদের স্মৃতিগুলো মনে রাখি যেখানে আমরা এই খেলাকে প্রমোট করেছি, কখনও দঃ আফ্রিকায় গেছি। আমি কৃতজ্ঞ তোমার কাছে যে ২০১৬ সালে মালোরকাতে রাফা নাদাল অ্যাকাদেমির উদ্বোধনে আমায় ডাকায়। ২০২২ সালে লেভার কাপে আমার পার্টনার হিসেবে তোমার থাকা, আর দুজনের চোখের জল সারাজীবন মনে থাকবে। তোমায় ভবিষ্যৎতে জন্য অনেক শুভেচ্ছা।’
নাদালের বিপক্ষে ৪০ ম্যাচ খেলেছেন ফেদেরার। যেখানে ২৪-১৬ ব্যবধানে এগিয়ে নাদাল। গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে দুজনের ৯ বারের লড়াইয়ে নাদাল জিতেছেন ৬ বার। দুজনের ২০০৮ উইম্বলডনের ফাইনালকে টেনিস ইতিহাসের সেরা ম্যাচগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা হয়। রেকর্ড ১৪ বার ফরাসি ওপেন জিতেছেন নাদাল। এক সময়ে তিনিই ছিলেন ছেলেদের এককে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক। পরে তাকে টপকে ২৪ গ্র্যান্ড স্ল্যামের চূড়ায় ওঠেন আরেক কীংবদন্তি নোভাক জোকোভিচ।