images

স্পোর্টস / ক্রিকেট

মিরপুর থেকে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা পূরণ হবে সাকিবের?

স্পোর্টস ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৫ পিএম

হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই প্রবল চাপে ছিলেন বাংলাদেশের পোস্টারবয় সাকিব আল হাসান। খুনের মামলায় জড়ানো থেকে শুরু করে প্রাণনাশের হুমকি শেষে শেয়ারবাজার কারসাজির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি এতই জটিল যে, দেশে ফেরার কথা চিন্তাই করতে পারছেন না। দেশে এক সময় যিনি ছিলেন মহাতারকা, সেই তিনিই এখন গ্রহণযোগ্যতা হারিয়ে অপরাধী হয়ে গিয়েছেন।

সাকিবকে বলা হয় সব সমস্যার সমাধান। ভাবা হচ্ছিল, বর্তমান পরিস্থিতির এখান থেকে ইউটার্নের জন্য ক্রিকেটকেই আঁকড়ে ধরবেন। কিন্তু শেষ বেলায় সেই সমাধানটাই যে বড় সমস্যা হয়ে উঠছিল বাংলাদেশের জন্য। মাঠে ও মাঠের বাইরে বিতর্ক আর অফ ফর্ম ছেয়ে ধরেছিল তাঁকে। ফিটনেস ইস্যুতে তিনি নিজেও মানিয়ে নিতে পারছিলেন না সব কিছুর সাথে। তাই প্রস্থানকেই তিনি সমাধান মেনে বুক পেতে দিলেন বিদায়ের মিছিলে।

ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। অক্টোবরে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলে সাদা পোশাকের ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন সাকিব। তবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে মামলা, দেশে ফিরলে গ্রেপ্তারও হতে পারেন তিনি। ফলে দেশে ফিরতে না পারলে কানপুর টেস্টই হবে সাদা পোশাকে সাকিবের শেষ টেস্ট।

shakib-al-hasan-has-recently-endured-an-underwhelming-phase-in-tests

কানপুর টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব অবসরের কথা ঘোষণা করেন। সাকিব দুটো শর্ত একইসঙ্গে দিয়েছেন। মিরপুরে তিনি শেষ টেস্ট খেলতে চান। ‘আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে আমি আমার শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছি, মিরপুর টেস্টে (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে) খেলতে পারলে সেটি হবে আমার শেষ টেস্ট। মিরপুর থেকে টেস্টে বিদায় নেবো।’ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজ খেলার কথা বাংলাদেশের। যদিও নিরাপত্তাজনিত কারণে সেই সিরিজ আদৌ হবে কী না তা নিয়ে রয়েছে ধোয়াশা। আর যদি হয়ও সাকিবের ঘরে ফেরা এই মুহূর্তে মুশকিল। 

কেননা বিভিন্ন ইস্যুতে মামলা, দেশে ফিরলে গ্রেপ্তারও হতে পারেন তিনি। ফলে দেশে ফিরতে না পারলে কানপুর টেস্টই হবে সাদা পোশাকে সাকিবের শেষ টেস্ট। আর সেই কারণেই সাকিব বলছেন, ‘ঘরে ছেড়ে আসা খুব একটা মুশকিল নয়। কিন্তু ঘরে বাস করা বেশ চাপের।’

দেশে ফেরা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোন সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।’

368695_01_02

দেশে ফিরতে না পারলে কানপুরেই নিজের শেষ টেস্ট হবে উল্লেখ করে সাকিব বলেন, 'আমার দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই খেলতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।'

৩৭ বছরের ক্রিকেটার ২০০৭ সাল, প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে খেলছেন। এই সাকিবের অবসর নেওয়া মানে একটা যুগের অবসান হয়ে গেল। তার থেকেও বড় কথা বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল সাকিবের নাম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট যতটুকু প্রাধান্য পেয়েছে, তার পুরোটাই সাকিবের জন্য। এই সাকিব অবশ্য পরবর্তী প্রজন্মের বেশ কিছু উঠতি তারকাকে রেখে গেলেন। যাঁরা তাঁর বিশ্বকাপ না জেতার স্বপ্ন হয়তো পূরণ করবেন!