স্পোর্টস ডেস্ক
০১ জুন ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আয়োজন ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ’ নিয়ে ক্রিকেটবিশ্বে উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। এবারই প্রথমবারের মতো ২০ দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত হবে এ টুর্নামেন্ট। আইসিসির দশ পূর্ণ সদস্য দলের সঙ্গে খেলবে সহযোগী আরও দশটি দেশ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড। ২০২২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। এবারের আসরেও শক্তিশালী এক দল নিয়েই খেলতে নামবে ইংলিশরা। টুর্নামেন্টে জস বাটলারের দলকে নিয়ে সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে। তবে ইতিহাস বলছে, সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটের এ মহাযজ্ঞে এক আসরের চ্যাম্পিয়নরা পরের আসরে গিয়ে সাফল্য কম, ব্যর্থই হয়েছে বারবার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের খেলা হয়েছিল ২০০৭ সালে। উদ্বোধনী আসরে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির ভারত। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর পরের আসরেও শক্তিশালি এক দল নিয়েই খেলতে নেমেছিল ভারতীয়রা।
তবে পরের আসরেই আশ্চর্য অধঃপতন হয়েছিল দলটির। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুইটি ম্যাচই জিতে সুপার এইটে উঠলেও ধোনির দল পরের পর্বে যেতে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচই হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায় তখনকার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। সেবার ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল শহিদ আফ্রিদির পাকিস্তান।
এদিকে পরের আসরে ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে আর চ্যাম্পিয়ন ভাগ্য কাজে লাগিয়ে শিরোপার কাছে যেতে পারেনি পাকিস্তান। গ্রুপ পর্ব আর সুপার এইটের বাঁধা কাটিয়ে সেমিফাইনালে উঠলেও ফাইনালের টিকিট কাটতে পারেনি ম্যান ইন গ্রিনরা। শেষ চারে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে বাদ পড়ে আগেরবারের চ্যাম্পিয়নরা। সেবার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে ইংল্যান্ড।
কিন্তু ২০১২ আসরে আর সেই সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি ইংলিশরা। সেবার সুপার এইট থেকেই বিদায় নিতে হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের। ওই আসরে ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে পরেরবার বাংলাদেশে হওয়া বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন্স লাক কাজে লাগেনি ক্যারিবীয়দের। বরং টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে লঙ্কানরা, একই সঙ্গে জিতে নেয় শিরোপাও।
তবে ২০১৬ সালের আসরেই মুদ্রার অপর পিঠ দেখতে হয় লঙ্কানদের। আর সেই আসরে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে পরের আসরেই আবার বাজে পারফর্ম্যান্সের কারণে সুপার টুয়েলভ থেকেই বিদায় নিতে হয় ক্যারিবীয়দের। সেবার ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলে অস্ট্রেলিয়া।
তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া এরপর ঘরের মাটিতে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এ টুর্নামেন্ট খেলেও চ্যাম্পিয়নদের অভিশাপ কাটাতে পারেনি। সেবার রান রেটের কারণে ছিটকে যায় তারা। আর ফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা উঁচিয়ে ধরে ইংল্যান্ড।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গত আটটি আসরেই আগেরবারের চ্যাম্পিয়নরা পরেরবার আর সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি। সে হিসেবে কি এবার ইংল্যান্ডের সঙ্গেও ঘটতে চলেছে একই ঘটনা? এখন দেখার পালা শক্তিশালী দল নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পান কি না জস বাটলাররা।