ধর্ম ডেস্ক
০৮ মে ২০২৩, ১২:৪১ পিএম
সতর ইসলামি শরিয়তের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। শরীরের যেসব অঙ্গ লজ্জার কারণে ঢেকে রাখা হয় তাকে সতর বলা হয়। অন্য কারো সামনে সতর ঢাকা ফরজ। ইসলামের বিধানমতে পুরুষের সতর হলো নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত।
আর মাহরামদের সামনে নারীদের সতর হলো মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গর্দানসংশ্লিষ্ট সিনার ওপরের অংশ ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৫/৩২)
নামাজের সময় নারীদের হাত, পা, মুখ ছাড়া পূর্ণ শরীরই সতর। নামাজের বাইরেও অতীব প্রয়োজনে চেহারা, পা ও হাত খোলা জায়েজ আছে। যেমন—রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড় হলে, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়া ইত্যাদি। (ফতোয়ায়ে শামি: ১/৪০৬, ফতোয়ায়ে রহিমিয়া: ৪/১০৬)
স্বামী স্ত্রী একে অপরের সামনে প্রয়োজনে সতর খুলে রাখতে কোনো অসুবিধা নেই। তবে অহেতুক বিনা প্রয়োজনে স্বামী-স্ত্রী একে অপরের সামনে সতর খুলে না রাখাই উত্তম। কারণ কেউ না দেখলেও আল্লাহ তাআলা সবকিছু দেখেন এবং আমাদের সাথে ফিরিশতা থাকেন।
হাদিসে এসেছে, মুয়াবিয়া বিন হাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘তুমি তোমার স্ত্রী ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে তোমার লজ্জাস্থান সর্বদা হেফাজত করো (অর্থাৎ ঢেকে রাখো)।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি কোনো ব্যক্তি কোথাও একাকি থাকে! (তখনও কি তা ঢেকে রাখতে হবে?)।’ তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, কেননা আল্লাহকে অধিক লজ্জা করা উচিত।’ (তিরমিজি: ২৭৬৯)
হাদিসে আল্লাহকে লজ্জা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। লজ্জা আসলে মুমিনের গুণ। রাসুলুল্লাহ (স.) খুব লাজুক ছিলেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (স.) গৃহবাসিনী পর্দানশিন কুমারীদের চেয়েও বেশি লজ্জাশীল ছিলেন। অন্য রেওয়ায়েতে আছে, যখন রাসুল (স.) কোনো কিছু অপছন্দ করতেন, তা চেহারায় বোঝা যেত। (বুখারি: ৩৫৬২)
তাই শুধু স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সামনে নয়, লোকচক্ষুর আড়ালেও সতর না খোলাই উত্তম; যদিও এর অবকাশ আছে। ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, তোমরা নগ্নতা হতে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবিন) যারা পেশাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮০০)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক বিষয়ে নবীজির সুন্নতের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।