রমজানে কোন সময় দোয়া বেশি কবুল হয়

পবিত্র রমজান হচ্ছে দোয়া কবুলের মাস। রোজাদার বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। এ ব্যাপারে নবী (স.) বলেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া অগ্রাহ্য করা হয় না (বরং কবুল করা হয়); পিতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া এবং মুসাফিরের দোয়া।’ (বায়হাকি: ৩/৩৪৫; সিলসিলাতুস সহিহা, আলবানি: ১৭৯৭ )

মাহে রমজান মুমিনের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার। এ মাসে বিশেষ তিনটি সময়ের কথা এসেছে হাদিসে, যখন বান্দার প্রতি আল্লাহর করুণার ধারা বর্ষিত হয়। অথচ না জেনেই অনেকে সময়গুলো অবহেলায় কাটিয়ে দেন। 

১) ফজরের পর
রমজানে ফজরের পর বেশিরভাগ মানুষ ঘুমিয়ে থাকেন। অথচ সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহানবী (স.) বলেন—

ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই দিনে আল্লাহকে স্মরণ করার সবচেয়ে উত্তম সময় ফজরের পর’ (আল আজকার, পৃষ্ঠা-১৫৫)। বিজ্ঞ আলেমরা বলেন, ফজরের পর আল্লাহ জীবিকা বণ্টন করেন। তাই এসময়ে ঘুমানো অপছন্দনীয়। বিশেষত রমজান মাসে, যখন আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহের দুয়ার উন্মুক্ত করে দেন এবং প্রতিটি নেক কাজের প্রতিদান বৃদ্ধি করে দেন।

২) ইফতারের পূর্বমুহূর্ত
পবিত্র রমজানে দোয়া করার জন্য ইফতারের আগমুহূর্ত খুবই মূল্যবান সময়। পূর্ববর্তী আলেমরা ইফতারের আগের সময়টুকু দোয়া ও আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকতেন। কেননা মহানবী (স.) বলেছেন—

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মানুষ এ সময়ে ইফতার প্রস্তুত করার কাজে ব্যস্ত থাকেন। বিশেষ করে নারীরা আজান পর্যন্ত কাজে লেগে থাকেন, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

৩) রাতের শেষ তৃতীয়াংশ
রাতের শেষ সময়ে ইবাদত-বন্দেগী-দোয়া আল্লাহর কাছে পছন্দনীয়। আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য শেষ রাতের দোয়া-প্রার্থনার বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে এসময়ের দোয়া ও প্রার্থনার প্রশংসা করে বলা হয়েছে, ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী এবং শেষ রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারী।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৭)

তাই রোজাদার মুসলমানের উচিত, সাহরির আগে বা পরে তাহাজ্জুদ আদায়ে সচেষ্ট হওয়া এবং এ সময় আল্লাহর দরবারে ক্ষমা ও কল্যাণ প্রার্থনা করা।

তবে, এমন নয় যে, শুধু এই তিন সময়েই দোয়া-দরুদ কিংবা ইবাদত-বন্দেগী করতে হবে। বরং জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর ইবাদত ও জিকিরে সজীব করতে সচেষ্ট হন একজন মুমিন। আল্লাহ তাআলা বলেন—

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পবিত্র রমজানের প্রত্যেকটি মুহূর্তের মূল্য বোঝার এবং সে অনুযায়ী যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন।