images

ইসলাম

‘রিকশাওয়ালাকে সালাম দিন, বেশি সওয়াব পাবেন’

ধর্ম ডেস্ক

২৩ মার্চ ২০২২, ০২:১৬ পিএম

বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, শাবান মাসে মৃত সুন্নত জিন্দা করার আলাদা কদর রয়েছে। এটি নবীজি (স.)-এর সুন্নত। দুই মর্যাদাপূর্ণ মাসের মধ্যবর্তী হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবে শাবান মাসকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অথচ প্রিয়নবী (স.) এই মাসকে ইবাদতের জন্য বেশি গুরুত্ব দিতেন।

সম্প্রতি ‘শাবান মাসে রমজানের প্রস্তুতি’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি আরো বলেন, সামনে রমজান আসছে, তখন বেশি করে ইবাদত-বন্দেগি করবো—এমন ভাবনা থেকে অবহেলায় কেটে যায় শাবান মাস। কিন্তু শাবানকে নবীজি (স.) এতই গরুত্ব দিতেন যে, শেষের কিছুদিন ছাড়া পুরো শাবানজুড়েই তিনি রোজা রাখতেন। এ প্রসঙ্গে উসামা বিন জায়িদ (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন—

‘রমজান ও রজবের মধ্যবর্তী এ মাসের ব্যাপারে মানুষ উদাসীন থাকে। এটি এমন মাস, যে মাসে বান্দার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই, আল্লাহর কাছে আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার।’ (সুনানে নাসায়ি: ২৩৫৭)

প্রিয়নবী (স.) শাবান মাসে বেশি রোজা রাখতেন কেন? এর প্রথম কারণ হলো- আগের মাসটি সম্মানিত রজব মাস, আর পরের মাসটি হলো সাইয়িদুশ শুহুর বা সকল মাসের সেরা মাস (রমজান)। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ মাসের মাঝখানে শাবান মাসটি বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্যের মাস না হওয়ার কারণে অনেকে এই মাসে গাফেল বা উদাসীন থাকেন। মানুষ যে সময়টিতে আল্লাহর ইবাদতে আলসেমি করে, ওই সময়ে ইবাদতের বিশেষ গুরুত্ব আছে বিধায় নবীজি (স.) শাবান মাসে নফল রোজা রাখার জন্য বিশেষভাবে যত্নবান হতেন।

হাদিসের শিক্ষা হলো, যে আমলটি সমাজে প্রচলিত নয়, যে আমলের ব্যাপারে মানুষ অবহেলা করে বা আত্মভোলা থাকে, সে আমলটি যদি আপনি সমাজে জিন্দা করার চেষ্টা করেন, তার সওয়াব ও বিনিময় বেশি পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ভোর রাতে তাহাজ্জুদের সময় প্রায় সবাই ঘুমিয়ে থাকেন, ওই সময় আপনি যদি আল্লাহর ভয় এবং তাঁর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নামাজে দাঁড়িয়ে যান, তাহলে তার সওয়াব অন্য সময়ের নফল ইবাদতের চেয়ে অনেক বেশি। হাদিস থেকে আমরা সে শিক্ষা পাই। এ প্রসঙ্গে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন—

‘ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো রাতের (তাহাজ্জুদ) নামাজ।’ (সহিহ মুসলিম: ১১৬৩)

একইভাবে একজন রিকশাওয়ালা সমাজে অবহেলিত। তাকে কেউ তেমন গুরুত্ব দেয় না। মসজিদের ইমাম বা খতিব সাহেবকে, নেতাকে, মুরুব্বিকে সবাই সালাম দেয়। এটি স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু খেটে খাওয়া রিকশাওয়ালাকে অধিকাংশ মানুষ সালাম দেয় না। 

সেজন্য সুন্নত জিন্দা করার নিয়তে আপনি যদি ওই অবহেলিত লোকটিকে আরো বেশি করে সালাম দেন, শ্রদ্ধা ও মহব্বত প্রদর্শন করেন, তাহলে বেশি সওয়াব পাবেন ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসকে গুরুত্ব দেওয়ার তাওফিক দান করুন। ইসলামের মহান সৌন্দর্য অনুধাবন করে সে অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।