images

ইসলাম

‘নেককার স্ত্রী’ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ

ধর্ম ডেস্ক

২০ মার্চ ২০২২, ০৯:১৪ এএম

নারী ছাড়া পুরুষের জীবন যেমন অর্থহীন, একইভাবে পুরুষ ছাড়া নারীর জীবনও অপরিপূর্ণ। এক কথায় একে অন্যের পরিপূরক। ‘তারা তোমাদের আবরণস্বরূপ আর তোমরা তাদের আবরণ’ (সুরা বাকারা: ১৮৭)। স্ত্রী যদি নেককার হন, তাহলে দাম্পত্য জীবন পরিণত হয় স্বর্গরাজ্যে। আর সেই স্বামী-স্ত্রীকে বলা হবে ‘জান্নাতে প্রবেশ করো তোমরা এবং তোমাদের স্ত্রীরা সানন্দে।’(সুরা জুখরুফ: ৭০)

রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, পার্থিব জগতটাই হল ক্ষণিক উপভোগের বস্তু। আর পার্থিব জগতের সর্বোত্তম সম্পদ সতী সাধ্বী নারী। (সহিহ মুসলিম: ১৪৬৭; মুসনাদে আহমদ: ৬৫৬৭; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩১)

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘পুরুষ নারীদের অভিভাবক, কারণ আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এ কারণে যে, পুরুষগণ নিজেদের অর্থসম্পদ ব্যয় করে। সুতরাং সাধ্বী স্ত্রীগণ অনুগত হয়ে থাকে। পুরুষের অনুপস্থিতিতে আল্লাহর হেফাজতে (তার অধিকারসমূহ) হেফাজত করে।’ (সুরা নিসা: ৩৪)

নেককার স্ত্রী মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ—কথাটি ছোট হলেও তাৎপর্য ব্যাপক। একজন নেককার স্ত্রী স্বামীর দ্বীন-দুনিয়া উভয় জগতকে কল্যাণময় করার কাজে ন্যস্ত থাকেন। নেককার নারী কখনও চান না তাঁর স্বামী বেনামাজি কিংবা দুর্নীতিপরায়ণ হোক। একইসঙ্গে তিনি খরচের ব্যাপারেও থাকেন খুবই সচেতন।
স্বামীর আনুগত্যের গুণে গুণান্বিত এবং নিজের চরিত্রের উত্তম হেফাজতকারী হয়ে থাকেন নেককার নারী। ওসব নারীদের জন্য জান্নাতের ওয়াদা রয়েছে। 

স্ত্রী নেককার—যেভাবে বুঝবেন 

নেককার স্ত্রী চেনার উপায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে হাদিসে। বলা হয়েছে—
‘উত্তম স্ত্রী সে-ই, যার দিকে তাকালে তুমি আনন্দিত হও, আদেশ করলে আনুগত্য করে, তুমি দূরে থাকলে তার নিজের ব্যাপারে ও তোমার সম্পদের ব্যাপারে তোমার অধিকার রক্ষা করে। তারপর তিনি কোরআনের উক্ত আয়াত (পুরুষ নারীদের অভিভাবক) তেলাওয়াত করেন। (তাফসিরে তাবারি: ৯৩২৯; মুসনাদে ত্বয়ালিসি: ২৩২৫) 

আবু হুরায়রা রা. বলেন, নবী কারিম (স.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, নারীদের মধ্যে কোন নারী উত্তম। তিনি বললেন, স্বামী যাকে দেখলে আনন্দবোধ করে, যাকে আদেশ করলে আনুগত্য করে, স্ত্রীর বিষয়ে এবং সম্পদের ব্যাপারে স্বামী যা অপছন্দ করে তা থেকে বিরত থাকে। (মুসনাদে আহমদ: ৭৪২১; সুনানে নাসায়ি, কুবরা: ৮৯৬১)

পাত্রী নির্বাচনে প্রথম দেখার বিষয় দ্বীনদারী

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, তিন গুণের যেকোনো একটি গুণের নারীকে বিবাহ করা হয়: ধন-সম্পদের কারণে, রূপ-সৌন্দর্যের কারণে ও দ্বীনদারির কারণে। তুমি দ্বীনদার ও চরিত্রবানকেই গ্রহণ করো।’(মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ১৭৪৩৪; মুসনাদে আহমদ: ১১৭৬৫; সহিহ ইবনে হিববান: ৪০৩৪)

নেককার স্ত্রীর বিশেষ গুণ

কোরআন-হাদিস অনুযায়ী, নেককার নারীরা বিশেষ কিছু গুণের অধিকারী হয়ে থাকেন। যেমন:
দ্বীনদারী 
বিশ্বস্ত ও অনুগত 
সম্পদের হেফাজতকারী
নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী 
সরলমনা 
ঘরে অবস্থানকারী

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল নারীকে নেককার ও সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে কবুল করুন। পুণ্যবতী স্ত্রীর মর্যাদা দান করুন। আমিন।