images

ইসলাম

ঘুমানোর আগে ছোট ৫টি আমলের কথা ভুলবেন না

ধর্ম ডেস্ক

১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০৪ পিএম

ঘুমিয়ে থেকেও সারারাত ইবাদতের সওয়াব লাভ করার জন্য সহজ কিছু আমলের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে হাদিসে। এসব আমলগুলোকে নিজের রুটিন বানিয়ে নিলে জীবনের প্রত্যেকটি রাত হবে ইবাদতময়। আমলগুলো হলো- (১) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ (২) আয়াতুল কুরসি পাঠ (৩) তাসবিহে ফাতেমি পাঠ (৪) অজু করে ঘুমানো (৫) ঘুমের দোয়া পাঠ।

এতে মিলবে কী, বা এর ফজিলত কী? আসুন জেনে নিই বিস্তারিত।

১) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত
বদরি সাহাবি আবু মাসউদ (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, সুরা বাকারার শেষে এমন দুটি আয়াত রয়েছে, যে ব্যক্তি রাতের বেলা আয়াত দুটি তেলাওয়াত করবে তার জন্য এ আয়াত দুটোই যথেষ্ট। অর্থাৎ রাতে কোরআন তেলাওয়াতের যে হক রয়েছে, কমপক্ষে সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত তেলাওয়াত করলে তার জন্য তা যথেষ্ট হয়ে যাবে। আব্দুর রহমান (রহ) বলেন, পরে আমি আবু মাসউদের সঙ্গে দেখা করলাম। সেসময় তিনি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করছিলেন। এ হাদিসটির ব্যাপারে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি সেটি আমার নিকট বর্ণনা করলেন। (সহিহ বুখারি ৪০০৮)

আরও পড়ুন: সুরা বাকারার ফজিলত

২) আয়াতুল কুরসি পাঠ
মিথ্যুক শয়তানের সত্য কথা নিয়ে সুন্দর একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে সহিহ বুখারিতে। ওই ঘটনায় শয়তানের যে কথাটিকে নবীজি (স.) সত্যকথা বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন সেটি হলো—‘যখন ঘুমাতে যাবে তখন আয়াতুল কুরসি পড়ে ঘুমাবে তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য একজন পাহারাদার নিযুক্ত করবেন, যিনি তোমার সঙ্গে থাকবেন। আর কোনো শয়তান সকাল পর্যন্ত তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ (সহিহ বুখারি: ২৩১১)

৩) তাসবিহে ফাতেমি পাঠ
তাসবিহটি হলো—৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবর পাঠ করা। রাসুলুল্লাহ (স.) কন্যা ফাতেমা (রা.)-কে পড়তে বলেছেন তাই এই জিকিরটি তাসবিহে ফাতেমি নামে পরিচিত। আল্লাহর রাসুল (স.) কন্যা ও জামাতা যথাক্রমে ফতেমা (রা.) ও আলী (রা.)- কে বলেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু বলে দেব না, যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন (৩৩) বার সুবহানাল্লাহ, (৩৩) বার আলহামদুলিল্লাহ এবং (৩৪) বার আল্লাহু আকবর বলবে; তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে।’ (বুখারি: ৩৭০৫)

৪) অজু করে ঘুমানো
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের দেহগুলোকে পবিত্র রাখবে, আল্লাহ তোমাদের পবিত্র করুন। যদি কোনো বান্দা অজু অবস্থায় ঘুমায় তাহলে তার পোশাকের মধ্যে একজন ফেরেশতা শুয়ে থাকেন। রাতে যখনই এ ব্যক্তি নড়াচড়া করে তখনই এ ফেরেশতা বলেন, হে আল্লাহ আপনি এ ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিন, কারণ সে অজু অবস্থায় ঘুমিয়েছে।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩/৩২৮; আলবানি, সহিহুত তারগিব: ১/৩১৭)

আরও পড়ুন: ১১ শ্রেণির মানুষের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন

৫) ঘুমের দোয়া পাঠ
ঘুমানোর আগে এই দোয়াটি পড়ুন ‏ اَللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا‘আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া।’ অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আপনার নামে আমি শয়ন করছি এবং আপনারই অনুগ্রহে পুনরায় জাগ্রত হবো। (বুখারি: ৬৩২৪)

উল্লেখ্য, রাতের যেকোনো আমলের সওয়াব বেশি, আবার গুনাহেরও কাফফারা হয়। তাই পূর্বসূরি মুসলিম মনীষীরা রাতের আমলে খুব জোর দিতেন। আবু উমামাহ (রা.) বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, তোমরা অবশ্যই রাতে ইবাদত করবে। কারণ এটা তোমাদের আগের নেককারদের অভ্যাস। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় আর পাপের কাফফারাস্বরূপ। (তিরমিজি: ৩৬১৯) 

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে প্রত্যেক রাতে ঘুমানোর আগে উল্লেখিত আমলগুলো করার তাওফিক দান করুন। আমিন।