images

ইসলাম

বান্দার যে হকটি নষ্ট করলে ক্ষমার সুযোগ নেই

ধর্ম ডেস্ক

২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১২:২০ পিএম

মানুষের সব গুনাহ সাধারণত আল্লাহ ও বান্দার হকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। আল্লাহর হক নষ্ট হলে কাজা বা কাফফারা কিংবা তাওবা-ইস্তেগফারের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট হলে ওই বান্দা যতক্ষণ ক্ষমা করবে না, ততক্ষণ আল্লাহও ক্ষমা করেন না। আবার বান্দার এমন হকও রয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট বান্দারও ক্ষমা করার সুযোগ নেই। যেকারণে সেই গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই কঠিন। সেই গুনাহটি কী?

সেই গুনাহটি হলো শিশুর প্রতি অবিচার বা নির্যাতন। এটি এমন গুনাহ, যার ব্যাপারে আলেমরা বেশি সতর্ক করে থাকেন। মুফতি মুহাম্মাদ শফি (রহ.) চমৎকার বলেছেন—শিশুদের মারধর করা খুবই ভয়াবহ গুনাহ এবং এ গুনাহ থেকে ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা এটি এমন পর্যায়ের গুনাহ যা তাওবা অথবা ওই শিশুর কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিলেও ক্ষমা লাভ হয় না। কেননা নাবালকের ক্ষমা শরিয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই শিশুদের মারধর করতে ও তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করার ব্যাপারে খুবই সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। (ইসলাহি মাজালিস, মুফতি তাকি উসমানি)

আরও পড়ুন: জুলুম কেমন গুনাহ

দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান সমাজে শুধু অভিভাবকদের মাধ্যমে নয়, শিক্ষকের মাধ্যমেও এমন ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যায়। কোনো কোনো শিক্ষকের রুক্ষ মনোভাবের কারণে শিক্ষার্থীরা নির্মমতার শিকার হয়। এটি স্পষ্ট অন্যায় ও জুলুম। প্রিয়নবী (স.) কখনও শিশুদের ওপর রাগ করতেন না। হজরত আনাস (রা.) ৮ বছর বয়স থেকে নবীজির খেদমত করেছেন। তিনি নবীজির আচরণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি ৯ বছর রাসুলুল্লাহ (স.)-এর খেদমত করেছি। আমার কোনো কাজে আপত্তি করে তিনি কখনো বলেননি, ‘এমন কেন করলে? বা এমন করোনি কেন?’ (মুসলিম: ২৩০৯)। আর আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের জন্য রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।’ (সুরা আল-আহজাব: ২১)

হাদিসে এসেছে, এক ব্যক্তি বলল—হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বলেন, ‘তুমি রাগ করো না।’ লোকটি বলল, রাসুল (স.) যা বলেছেন—তা বলার পর আমি চিন্তা করে দেখলাম, ক্রোধই হলো সব অনিষ্টের মূল। (মুসনাদে আহমদ: ২৩১৭১)

আরও পড়ুন: যেসব আমলে আল্লাহর রাগ কমে যায়

শিশুকে কিংবা যে কাউকে অন্যায়ভাবে মারধর ইসলামি শরিয়তে জায়েজ নেই। এই সম্পর্কে আল্লাহর রাসুল (স.) কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কাউকে অন্যায়ভাবে প্রহার করবে, কেয়ামতের দিন তার থেকে এর প্রতিশোধ গ্রহণ করা হবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ: ১৮৬)

রাসুল (স.)-এর সুমহান হাদিস থেকে সবার শিক্ষা নেওয়া জরুরি। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সেই তাওফিক দান করুন। আমিন।