ধর্ম ডেস্ক
১০ মার্চ ২০২২, ০৯:১৬ এএম
জান্নাতের নেয়ামত অপরিসীম। আল্লাহ তাআলা জান্নাতিদের সকল ইচ্ছা পূরণ করবেন। কোরআন ও হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, সেখানে তারা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবে। কখনো অসুস্থ হবে না, দুর্দশাগ্রস্ত হবে না, পরিধেয় বস্ত্র কখনো পুরোনো হবে না এবং তার যৌবনও কখনো শেষ হবে না। জান্নাতের সুশীতল ছায়া, আপ্যায়ন, পানীয়, চক্ষু শীতলকারী নারীসঙ্গী, পরিবেশকগণ, বহুতলবিশিষ্ট সুউচ্চ মনোরম প্রাসাদ, বাগান ও ঝর্ণা, জান্নাতিদের প্রতি অভিবাদন এবং সবকিছুর ওপরে আল্লাহর সন্তুষ্টি—সকল নেয়ামতে পরিপূর্ণ থাকবেন চিরস্থায়ী জান্নাতিরা।
কিন্তু এমন একটি সময় আসবে, যখন তারা সকল নেয়ামতের কথা ভুলে যাবেন। অর্থাৎ একটু আগেও যেসকল নেয়ামতরাজির কারণে তিনি সুখি ও আনন্দিত ছিলেন, সেসকল নেয়ামতকে তখন ফিকে মনে হবে। কারণ, তিনি এমন একটি মুহূর্তের সাক্ষী হতে চলেছেন, যা ইতোপূর্বে কল্পনাও করেননি তিনি। আর তা হচ্ছে, মহান আল্লাহর দিদার।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুলের একটি হাদিস রুমের দেয়ালে বা কম্পিউটারের সামনে লাগিয়ে রাখতে পারেন। যেন অন্তর থেকে হাদিসটি কোনোদিন মুছে না যায়। সহিহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, “যখন জান্নাতিরা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আল্লাহ তাআলা তাদের বলবেন, তোমরা কি আমার কাছে আরো কিছু চাও? তখন তারা বলবে, ‘আপনি কি আমাদের মুখমণ্ডল উজ্জ্বল করে দেননি?’
যদিও এদিন সবাই আনন্দ আর উচ্ছ্বাসে মগ্ন থাকবেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলার বাণী, “এদিন জান্নাতবাসীরা আনন্দে মগ্ন থাকবে” (সুরা ইয়াসিন: ৫৫)
কিন্তু তারপরও জান্নাতিরা সেদিন এর চেয়েও বেশি কিছু পাবে। আল্লাহ সেদিন তাঁদের চোখের উপর থেকে পর্দা তুলে নেবেন আর আল্লাহর বান্দারা সেদিন তাদের রবকে নিজের চোখে দেখতে পাবে। আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার তুলনায় তারা এ পর্যন্ত যা যা পেয়েছে, সবকিছু ভুলে যাবে।” (সহিহ মুসলিম: ৪৬৭)
নিঃসন্দেহে বান্দার জন্য সর্বোত্তম ও মহান পুরস্কার আল্লাহ তাআলার সাক্ষাৎ। তাই এ পুরস্কারলাভে ধন্য হতে চাইলে মহান আল্লাহর কাছে সেই প্রার্থনা করতে হবে। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ অপছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ অপছন্দ করেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৫০৭)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর সাক্ষাৎ লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।