ধর্ম ডেস্ক
২৪ নভেম্বর ২০২২, ০১:৩৩ পিএম
এতে সন্দেহ নেই যে তাহাজ্জুদ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম উপায়। কোরআন-সুন্নাহ থেকেই তা প্রমাণিত। শেষ রাতে মানুষ যখন গভীর ঘুমে মগ্ন থাকে, তখন প্রভুর ভালোবাসায় যারা নামাজে দাঁড়ায়, তাদের প্রশংসা করে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা শয্যা ত্যাগ করে তাদের প্রতিপালককে ডাকে আশায় ও আশঙ্কায়। আর আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি, তা থেকে তারা ব্যয় করে।’ (সুরা সাজদা: ১৬)
কিন্তু রাতে ঘুম থেকে ওঠে অজু করা, নামাজ পড়া—এটি সবার পক্ষে সহজ হয় না। তাই যারা ঘুম ভেঙে উঠতে পারে না তাদেরকে প্রিয়নবী (স.) এমন এক আমলের কথা বলেছেন যা তাহাজ্জুদের ফজিলত লাভের উপায় হবে। সেটি হলো এশার নামাজের পর দু’রাকাত নফল নামাজ। বিতিরের আগে এই নফল পড়তে হয়।
রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘রাত্রি জাগরণ কষ্টকর ও ভারী জিনিস, তাই তোমরা যখন (শোয়ার আগে) বিতির পড়বে তখন দুই রাকাত (নফল) নামাজ পড়ে নেবে। পরে শেষ রাতে উঠতে পারলে ভালো, অন্যথায় এই দুই রাকাতই ‘কিয়ামুল লাইল’-এর ফজিলত লাভের উপায় হবে।’ (সুনানে দারেমি: ১৬৩৫; সহিহ ইবনে খুজাইমা: ১১০৬; তাহাবি: ২০১১)
আরও পড়ুন: ফরজ বাধ্যতামূলক, নফলে আল্লাহর নৈকট্য
শুধু দু’রাকাতই পড়তে হবে—বিষয়টি এমন নয়। এশার পর চার রাকাত নফলেরও বিশেষ ফজিলত রয়েছে। কাব (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে, ‘যে ব্যক্তি ভালোভাবে অজু করে এশার জামাতে অংশগ্রহণ করবে, অতঃপর এশার নামাজের পর চার রাকাত (নফল) নামাজ পড়বে, যাতে কিরাত-রুকু-সেজদা সঠিকভাবে আদায় করবে, তার জন্য শবেকদরের মতো সওয়াব লেখা হবে।’ (নাসায়ি: ৪৯৫৫)
আসলে আল্লাহ তাআলা চান- বান্দা তাঁর সন্তুষ্টির জন্য অতিরিক্ত কিছু করুক। ফরজ, ওয়াজিবের পর অতিরিক্ত নামাজই মহান প্রভুর প্রতি ভালোবাসার প্রমাণ। তাছাড়া আমরা অনেকেই শেষ রাতে উঠতে না পারার কারণে তাহাজ্জুদের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সেজন্যই নবীজি (স.) উম্মতকে তাহাজ্জুদ পড়তে না পারলে অন্তত দু’রাকাত বা চার রাকাত নামাজ পড়ে ঘুমাতে উৎসাহিত করেছেন। তাতেই মিলবে অজস্র সওয়াব ও ফজিলত।
আরও পড়ুন: তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম কানুন
তবে, মুমিনের উচিত তাহাজ্জুদ পড়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। কেননা তাহাজ্জুদ খাঁটি ঈমানদারের বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত ব্যয়কারী ও রাতের শেষ প্রহরে ক্ষমাপ্রার্থী।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। ঘুমানোর আগে অন্তত দু’রাকাত নফল পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।