images

ইসলাম

ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা কি জায়েজ?

ধর্ম ডেস্ক

০৬ নভেম্বর ২০২২, ০৬:৩২ পিএম

বর্তমানে মশা মারার প্রচলিত একটি ফাঁদ ইলেকট্রিক ব্যাট। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে মশা-মাছির উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য ইলেকট্রিক ব্যাটের ব্যবহার দিনদিন বেড়ে চলেছে। কিন্তু জানার বিষয় হলো-ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যাট দিয়ে মশা মারা কি জায়েজ আছে?

এর উত্তর হলো- অধিকাংশ ওলামায়ে কেরামের মতে ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মশা মারা জায়েজ নেই। কারণ, এর মাধ্যমে আগুন লেগে মশা পুড়ে যায়। অর্থাৎ ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে মূলত মশাকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। আর কোনো প্রাণীকে আগুনে পুড়িয়ে মারা জায়েজ নেই। কেননা, আগুন দিয়ে শাস্তি দেওয়া কেবল আল্লাহ তাআলারই কাজ। এটা কেবল আল্লাহ তাআলার জন্য সুনির্ধারিত। যেহেতু ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি পুড়ে যায়, তাই এই জাতীয় ব্যাট বা যন্ত্র ব্যবহার করে মশা-মাছি মারা জায়েজ হবে না। (বুখারি: ২/১০২৩; ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৬১)

আরও পড়ুন: ১০ গুরুতর হারাম কাজে মানুষ উদাসীন

হাদিস শরিফে এসেছে, ‘আগুন দিয়ে আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কেউ শাস্তি দিতে পারে না।’ (সহিহ বুখারি: ৩০১৬)

মহানবী (স.) দেখলেন এক সাহাবি পিঁপড়ার বাসা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। তখন তিনি বললেন, আগুনের প্রতিপালক ছাড়া আগুন দিয়ে অন্য কেউ শাস্তি দিতে পারে না।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৭৫)

ইকরিমা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, আলী (রা.) একদল মুরতাদকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন। এ সংবাদ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর কাছে পৌঁছালে তিনি বলেন, ‘আমি হলে তাদের আগুন দিয়ে পুড়াতাম না। কারণ, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা আল্লাহর শাস্তি দিয়ে কাউকে শাস্তি দিও না।’ (আবু দাউদ: ৪৩৫৩; বায়হাকি: ১৬৬৩৫; তিরমিজি: ১৪৫৮; বুখারি: ২৮৫৪)

আরও পড়ুন: অবৈধভাবে পণ্যের দাম বাড়ালে আল্লাহর শাস্তি কী?

তবে কষ্টদায়ক বা ক্ষতিকর প্রাণীকে হত্যা করা জায়েজ। (বুখারি: ৩০১৬; আবু দাউদ: ২৬৭৫)। সেক্ষেত্রে বিকল্প রাস্তা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষত মশা মারতে এমন পরিবেশ তৈরি করাই শ্রেয়, যা মশা জন্মের প্রতিবন্ধক হয়। 

প্রসঙ্গত, ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যাট দিয়ে মশা-মাছি মারা কিছু আলেমের মতে বৈধ। তাদের যুক্তি হলো- ইলেকট্রিক ব্যাট দিয়ে সরাসরি মশাকে পুড়িয়ে মারা হয় না। বরং প্রথমে কারেন্টের শক দিয়ে মারা হয়; তারপর আগুনে পুড়ে। আর কোনো প্রাণির মৃত্যুর পর তাকে আগুনের পোড়ানো বৈধ। 

এখানে লক্ষণীয় যে, প্রথম মত অধিক নিরাপদ ও তাকওয়াসমৃদ্ধ। এ কারণে অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম একে অবৈধ বলেছেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক কাজে তাকওয়ার পথ অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।