ধর্ম ডেস্ক
৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৭:৫৭ পিএম
লাগামহীন কথা সবসময় পরিত্যাজ্য। কিছু বলার আগে চিন্তা করে দেখতে হবে, কথাটির কোনো কুফল আছে কি না। আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত কোনো বিষয়ে তো অবশ্যই সংযত হতে হবে। তা নাহলে এমন হতে পারে যে সামান্য এক কথায় নিজেরই ইহকাল-পরকাল ধ্বংস হয়ে গেল। বিষয়টি মহানবী (স.) সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। জুনদুব (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে—
‘এক ব্যক্তি বলল, আল্লাহর কসম! অমুককে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তাআলা বললেন, কে আমার নামে শপথ করে বলে যে, আমি অমুককে ক্ষমা করব না? বরং আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং তোমার আমলকে নষ্ট করে দিয়েছি। (সহিহ মুসলিম: ৬৫৭৫-১৩৭/২৬২১)
এ প্রসঙ্গে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) অন্য এক বর্ণনায় উল্লেখে করেন, কথাটি যিনি বলেছেন, তিনি ছিলেন একজন ইবাদতগুজার ব্যক্তি। তিনি এমন একটি কথা বলেছেন, যা তার দুনিয়া ও পরকাল উভয়টিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’ (মুসলিম)
উল্লেখিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) মুসলিম উম্মাহকে সতর্ক করেছেন এই মর্মে যে, আল্লাহ কোনো অপরাধীকে ক্ষমা করবেন কি করবেন না—এ বিষয়ে শপথ করে বলার অধিকার কারো নেই। এমন করলে নিজেরই দুনিয়া-আখেরাত ধ্বংস হয়ে যাবে।
এটি চমৎকার শিক্ষণীয় হাদিস। এ থেকে জানা গেলো, আল্লাহ তাআলার এখতিয়ারভুক্ত কোনো বিষয়ে শপথ করার মর্মার্থ হলো- সে আল্লাহর ওপর ফয়সালা করে বসল। মূলত এটি আল্লাহকে পথ দেখানোর মতো বেআদবি। এ কারণেই তার জন্য দুনিয়া ও পরকালে হতাশা ও ক্ষতি অবধারিত হয়ে গেলো।
সুতরাং আল্লাহর ইচ্ছাধীন কোনো বিষয়ে নিশ্চিত করে কথা বলা মুসলমানের জন্য সমীচীন নয়। অনর্থক শপথ করা এমনিতেই ভালো কাজ নয়। পবিত্র কোরআনে এ বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে। মহানবী (স.) বলেছেন, ‘আর তুমি তার অনুসরণ করো না, যে কথায় কথায় শপথ করে, যে লাঞ্ছিত’ (সুরা কালাম: ১০)। মুমিনের জিহ্বা মূলত সজিব থাকে ভালো কথা ও জিকিরের মাধ্যমে। এ প্রসঙ্গে নবী কারিম (স.) বলেন, ‘আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে তোমার জিহ্বাকে সজীব রাখো।’ (তিরমিজি: ৩৩৭৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সবাইকে হাদিসের দিকনির্দেশনা যথাযথ মেনে চলার তাওফিক দিন। দুনিয়া ও পরকালে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতে সংযত কথা বলার তাওফিক দান করুন। আমিন।