images

ইসলাম

ঘুমের আগে যেসব সুরা পড়তেন নবীজি

ধর্ম ডেস্ক

৩০ অক্টোবর ২০২২, ১১:০০ এএম

কোরআনের সঙ্গে মহানবী (স.)-এর সম্পর্ক ছিল সুগভীর। তিনি বেশি পরিমাণ কোরআন তেলাওয়াত করতেন। অন্যের তেলাওয়াত শুনতেন। ঘুমের আগেও বিশেষ কিছু সুরা তেলাওয়াত করতেন প্রিয়নবী (স.)। সুরাগুলো হাদিসের উদ্ধৃতিসহ এখানে উল্লেখ করা হলো।

সুরা মুলক ও সাজদা: রাসুলুল্লাহ (স.) প্রতিদিন ঘুমানোর আগে সুরা মুলক ও সুরা সাজদা পাঠ করতেন। জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (স.) ‘আলিফ লাম মিম, তানজিলু’ (সাজদা) ও ‘তাবারাকাল্লাজি’ (মুলক) পাঠ না করে ঘুমাতেন না।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৮৯২)

সুরা বনি ইসরাইল ও জুমার: অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি ঘুমের আগে সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা জুমার পাঠ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘নবী (স.) সুরা জুমার ও বনি ইসরাইল পাঠ না করে ঘুমাতেন না।’ (সুনানে তিরমিজি: ৩৪০৫)

আরও পড়ুন: কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ মুজেজা কীভাবে?

তিন কুল: আয়েশা (র.) থেকে বর্ণিত, ‘প্রতিরাতে নবী (স.) বিছানায় যাওয়ার প্রাক্কালে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পাঠ করে দুই হাত একত্র করে হাতে ফুঁক দিয়ে যতদূর সম্ভব সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। মাথা ও মুখ থেকে শুরু করে দেহের সম্মুখভাগের ওপর হাত বুলাতেন এবং তিনবার এরূপ করতেন।’ (সহিহ বুখারি: ৫০১৭)

সুরা কাফিরুন: ফারওয়াহ ইবনু নাওফাল (রা.) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী (স.) নাওফাল (রা.)-কে বলেন, ‘তুমি ‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরুন’ সুরাটি পড়ে ঘুমাবে। কেননা তা শিরক থেকে মুক্তকারী।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৫০৫৫)

মুসাব্বিহাত সুরাগুলো: ইরবাজ ইবনে সারিয়া বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) ঘুমানোর আগে মুসাব্বিহাত সুরাগুলো পাঠ করতেন এবং বলতেন, এ আয়াতগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত আছে, যা হাজার আয়াতের চেয়ে উত্তম।’ (সুনানে তিরমিজি: ২৯২১)

আরও পড়ুন: কোরআন যাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না

মুসাব্বিহাত সুরাগুলো হলো- সুরা হাদিদ, হাশর, ছফ, জুমা ও তাগাবুন। (তাফসিরে কুরতুবি, ১৭/২৩৫)

সুরা আলে ইমরানের শেষ ১০ আয়াত: আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘..নবী (স.) রাতের অর্ধেক বা তার কাছাকাছি সময় পর্যন্ত ঘুমালেন। অতঃপর জাগ্রত হলেন এবং চেহারা থেকে ঘুমের রেশ দূর করলেন। পরে তিনি সুরা আলে ইমরানের (শেষ) ১০ আয়াত তেলাওয়াত করলেন।’ (সহিহ বুখারি: ৯৯২)

এছাড়া আয়াতুল কুরসি এবং সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াতের কথাও এসেছে হাদিসে। 

আয়াতুল কুরসি: আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি শোবার সময় আয়াতুল কুরসি পাঠ করে, তাহলে সকাল পর্যন্ত একজন ফেরেশতা তাকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করে।’ (সহিহ বুখারি: ৩২৭৫)

সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত: আবু মাসউদ বাদরি (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, যে ব্যক্তি রাতে সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করবে, তা তার জন্য যথেষ্ট হবে’ (সহিহ বুখারি: ৪০০৮)। ইমাম নববি (রহ.) উক্ত হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, ‘যথেষ্ট হওয়ার অর্থ তাহাজ্জুদ, শয়তান ও বিপদ থেকে যথেষ্ট হবে।’ (শরহু মুসলিম: ৬/৯২)

আল্লাহ তাআল মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত সুরাগুলো ঘুমানোর আগে তেলাওয়াত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।