images

ইসলাম

নফল ইবাদত কোনটার পর কোনটার বেশি সওয়াব?

ধর্ম ডেস্ক

২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:৫৩ পিএম

ফরজ ওয়াজিব আমলগুলো যথাযথ আদায় করা বান্দার জন্য বাধ্যতামূলক। এসব আমল ত্যাগ করলে কঠিন গুনাহ হবে। আর নফল ইবাদত না করলে গুনাহ নেই; কিন্তু আল্লাহর ভালোবাসা ও নৈকট্য অর্জনের জন্য ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতগুলোর সঙ্গে বেশি বেশি নফল ইবাদতের বিকল্প নেই।

রাসুলুল্লাহ (স.)  বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলির সঙ্গে দুশমনি রাখবে, আমি তার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করব। আমি যা কিছু আমার বান্দার ওপর ফরজ করেছি, তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করতে থাকবে।

এমনকি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নিই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই (রূপক অর্থে), যা দিয়ে সে শোনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তাহলে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তাহলে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দিই। আমি কোনো কাজ করতে চাইলে তা করতে কোনো দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি। (বুখারি: ৬৫০২)

তাছাড়া কেয়ামতের দিন বেশি দরকার হবে নফল ইবাদতের সওয়াব। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন বান্দার সর্বপ্রথম যে আমলের হিসাব নেওয়া হবে, তা হলো নামাজ। নামাজ সঠিক হলে সে সফল হলো। আর নামাজ সঠিক না হলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো। যদি তার ফরজে কিছু ত্রুটি থেকে যায়, তখন আল্লাহ বলবেন- দেখো, আমার বান্দার কোনো নফল আমল আছে কি না, যার মাধ্যমে ফরজে হয়ে যাওয়া ত্রুটি পূরণ হবে। অতঃপর তার বাকি সব আমল এমনই হবে।’ (তিরমিজি: ৪১৩)

চাইলে প্রতিদিনই সহজে নফল আমল করা যায়। যেমন সাধ্যমতো নফল নামাজ পড়া, নফল রোজা রাখা, রোগীকে দেখতে যাওয়া এবং সেবা করা, জিকির করা, দরুদ শরিফ পড়া, কোরআন শিক্ষা দেওয়া, কোরআন তেলাওয়াত করা, কবর জেয়ারত করা, মাসনুন দোয়াগুলো পড়া, দান-সদকা করা, সালামের প্রচার-প্রসার করা, মেসওয়াক করা, যেকোনো কাজে নিয়তকে পরিশুদ্ধ করা, সর্বদা অজু অবস্থায় থাকা, এমনকি একজন মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলাতেও নফল ইবাদতের সওয়াব পাওয়া যায়।

গুরুত্ব ও মহত্ত্বের বিচারে নফল ইবাদতের বিন্যাস হাদিসে এভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, সর্বাগ্রে নামাজ, এরপর তেলাওয়াতে কোরআন, তাসবিহ-তাহলিল, দান-খয়রাত ও রোজা। (শুআবুল ঈমান: ৩/৫১৮, মিরকাতুল মাফাতিহ: ৪/৬৭৩, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ৪/৫৪১)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ফরজ-ওয়াজিবের পাশাপাশি বেশি বেশি নফল ইবাদত করার মাধ্যমে তাঁর ভালোবাসা ও নৈকট্য অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।