ধর্ম ডেস্ক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১২:০২ পিএম
পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্রতম নগরী মক্কা। কোরআনের একাধিক আয়াতে পবিত্র নগরীর বর্ণনা এসেছে। এসব আয়াতে এই নগরীর সম্মান, মর্যাদা, প্রাচীনত্ব ও গুরুত্ব ফুটে ওঠে।
বিশেষ মর্যাদার অধিকারী: মহান আল্লাহ মক্কা নগরীকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। এই নগরীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) জন্মগ্রহণ করেন। নবীজি (স.) বলেছেন, ‘আমি আদিষ্ট হয়েছি সেই নগরীর প্রতিপালকের ইবাদত করতে, যাকে তিনি সম্মানিত করেছেন’ (সুরা নামল: ৯১)। অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ কাবাকে সম্মানিত ঘর এবং মানুষের কল্যাণের জন্য নির্ধারিত করেছেন।’ (সুরা মায়েদা: ৯৭)
নিরাপদ নগরী: আল্লাহ মক্কা নগরীকে নিরাপদ নগর হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং নিজে তার শপথ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘ত্বিন, জাইতুন, সিনাই পর্বত এবং এই নিরাপদ নগরীর শপথ।’ (সুরা ত্বিন: ১-৩)
আরও পড়ুন: পবিত্র কাবাঘরের ইতিহাস
মানবজাতির প্রথম ঘর: মক্কা নগরীতেই স্থাপিত হয়েছিল মানবজাতির প্রথম ঘর। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে ঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা তো বাক্কায় (মক্কায়), যা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারি।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)
সব নগরের মা: মক্কা নগরীকে মহান আল্লাহ ‘উম্মুল কুরা’ বা নগরগুলোর মা হিসেবে অভিহিত করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর এভাবে আমি আপনার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায়, যাতে আপনি সতর্ক করতে পারেন নগরগুলোর মা মক্কা ও তার চতুর্দিকের লোকজনকে।’ (সুরা আশ-শুরা: ৭)
মদিনর মতো মক্কাও নবীজির শহর: নবীজি (স.)-এর শহর হিসেবে মদিনা পরিচিত হলেও পবিত্র কোরআনে মক্কাকে মহানবীর শহর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ এই নগরীর, আর আপনি এই নগরীর অধিকারী।’ (সুরা বালাদ: ১-২)
নগরবাসীর জন্য দোয়া: মক্কা নগরীর অধিবাসীদের জীবন-জীবিকার প্রাচুর্যের জন্য আল্লাহর নবী ইবরাহিম (আ.) দোয়া করে বলেছিলেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! একে আপনি নিরাপদ নগরী করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখেরাতে ঈমান আনে তাদেরকে ফলমূল থেকে জীবিকা দান করুন।’ (সুরা বাকারা: ১২৬)
আরও পড়ুন: যে কারণে হজযাত্রীদের টানে নবীজির মদিনা শহর
আল্লাহপ্রেমীদের তীর্থ: যুগ যুগ ধরে মক্কা আল্লাহপ্রেমী মানুষের তীর্থ। এ জন্য আল্লাহ ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর ছেলে ইসমাঈল (আ.)-কে ইবাদতকারীদের জন্য এই নগরকে প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা দুজন পবিত্র করো আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য।’ (সুরা বাকারা: ১২৫)
আল্লাহর নিদর্শনে ভরপুর: মক্কা নগরী আল্লাহর নিদর্শনে ভরপুর। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাতে (মক্কায়) অনেক সুস্পষ্ট নিদর্শন আছে। (যেমন) মাকামে ইবরাহিম।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
প্রবেশ করলেই নিরাপদ: পবিত্র এই নগরীতে যে-ই প্রবেশ করবে, সে নিরাপত্তা লাভ করবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যে কেউ সেখানে (মক্কায়) প্রবেশ করে সে নিরাপদ।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৭)
মক্কার সম্মান রক্ষায় নবীজির হুঁশিয়ারি: মহানবী (স.) পবিত্র মক্কা নগরীর সম্মান রক্ষার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আমার উম্মত ততদিন পর্যন্ত নিরাপদ থাকবে, যতদিন পর্যন্ত তারা মক্কার যথার্থ সম্মান করবে। যখন তারা এর অন্যথা করবে, তখন তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩১১০)