ধর্ম ডেস্ক
৩০ জুলাই ২০২২, ১২:২২ পিএম
জামাতে নামাজ পড়ার জন্য হেঁটে মসজিদে যাওয়া অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, এতে মুসল্লি আল্লাহর জিম্মায় চলে যান। আবু উমামা আল-বাহেলি (রা.) রাসুল (স.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, তিন শ্রেণির মানুষ মহান আল্লাহর জিম্মায় থাকে—
১) যে আল্লাহর পথে জিহাদ করার জন্য বের হয়, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকে। সে মৃত্যুবরণ করলে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান অথবা নিরাপদে ফিরে এলে তাকে নেকি এবং গনিমতের প্রাপ্য অংশ দান করেন। ২) যে ব্যক্তি জামাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে মসজিদের দিকে অগ্রসর হয়, সেও আল্লাহর জিম্মায় থাকে। এ অবস্থায় সে যদি মারা যায়, তাহলে আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করেন। আর মসজিদ থেকে ফিরে এলে তার প্রাপ্য সওয়াব ও যুদ্ধলব্ধ সম্পদের অংশীদার করেন। ৩) যে ব্যক্তি নিজ বাড়িতে প্রবেশ করার সময় পরিবারের লোকজনকে সালাম দেয়, সেও মহান আল্লাহর জিম্মায় থাকে।’ (আদাবুল মুফরাদ: ১০৯৪)।
হেঁটে মসজিদে গমনকারীরা বিশেষ সুসংবাদপ্রাপ্ত। বুরায়দা (রা.) রাসুল (স.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যারা (জামাতে সালাত আদায়ের উদ্দেশ্য) অন্ধকার রাতে মসজিদে হেঁটে হাজির হয়, তাদের কেয়ামতের দিন পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দাও।’ (ইবনে মাজাহ: ৭৮১)
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় হাদিসবিশারদরা বলেন, কেয়ামতের দিন মুমিনদের মুখমণ্ডল চমকাতে থাকবে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানে ধাবিত হবে। তারা বলবে, হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের নূর পূর্ণ করে দিন এবং আমাদের ক্ষমা করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।’ (সুরা তাহরিম: ৮)
এছাড়াও আল্লাহ তাআলা মসজিদে যাতায়াতকারীর মর্যাদা বাড়িয়ে দেন, একইসঙ্গে অতীত গুনাহও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন কিছু জানাবো না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা গুনাহ মিটিয়ে দেবেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন? তা হলো, কষ্টকর অবস্থায়ও পূর্ণরূপে অজু করা, মসজিদের দিকে বেশি পদচারণ এবং এক সালাতের পর অন্য সালাতের জন্য অপেক্ষা করা...।’ (সহিহ মুসলিম: ২৫১)
মসজিদে যাওয়ার প্রতিটি পদক্ষেপে সওয়াব। জাবের বিন আবদিল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, মসজিদে নববির আশপাশে কিছু জায়গা খালি হলো। এটা দেখে বনু সালামা মসজিদে নববির কাছে স্থানান্তরিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
এ খবর রাসুলুল্লাহ (স.) জানতে পারলে তিনি তাদের বলেন, আমি জানতে পেরেছি- তোমরা মসজিদের কাছে চলে আসার ইচ্ছা করছ! তারা বলল, জি হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল, আমরা এমনটা ইচ্ছা করেছি। তিনি বলেন, ‘হে বনু সালামা, তোমরা তোমাদের বাড়িতেই থাকো। কেননা এতে (দূরত্বের কারণে) মসজিদে আসতে তোমাদের পদক্ষেপ বৃদ্ধি পাবে এবং তোমাদের পদচিহ্ন (তোমাদের আমলনামায়) লিখিত হবে। তারা বলল, (মসজিদের কাছে) স্থানান্তরিত হওয়া আমাদের আনন্দ দেবে না। (সহিহ মুসলিম: ৬৬৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর সকল মুসল্লিকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে আদায় করার তাওফিক দান করুন। পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া এবং এই মর্যাদাপূর্ণ আমলের পূর্ণ ফজিলত দান করুন। আমিন।