images

ইসলাম

যে ৪ গুনাহ করার সময় ঈমান থাকে না

ধর্ম ডেস্ক

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:৫১ পিএম

ইসলামে গুনাহকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১) কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ ২) সগিরা গুনাহ বা ছোট পাপ। কবিরা গুনাহের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য হলো শিরক বা আল্লাহর সঙ্গে কাউকে/কিছুকে অংশীদার করা। ‘আল্লাহ তাআলা অন্য গুনাহ ক্ষমা করলেও তার সঙ্গে শিরক করাকে ক্ষমা করবেন না’ (সুরা নিসা: ৪৮)। সুদ সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘এর সত্তর প্রকার গুনাহ; যার ছোটটি হলো নিজ মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার সমপর্যায়ের।’ (মুসতাদরাকে হাকেম)

আর কিছু কবিরা গুনাহকে ইসলাম এভাবে চিহ্নিত করেছে যে, ওসব গুনাহ করার সময় মানুষের মধ্যে ঈমান থাকে না। তার মানে, ওসব গুনাহ ঈমানওয়ালার জন্য নয়। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন—

‘জিনাকারী যখন জিনায় লিপ্ত হয়, তখন সে মুমিন থাকে না। যখন কেউ মদপান করে, তখন সে মুমিন থাকে না। কেউ চুরি করার সময় মুমিন থাকে না এবং কোনো ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, ভুক্তভোগী তার দিকে অসহায় তাকিয়ে থাকে; তখন সে (ছিনতাইকারী) মুমিন থাকে না। (সহিহ বুখারি: ৬৭৭২)

আরও পড়ুন: যে নামাজে সব গুনাহ মাফ

ইমাম নববি (রহ) বলেন, এই হাদিসের তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। তাঁর এই কথার সূত্র ধরে মতভেদগুলো একত্রিত করলে প্রায় ১৩টি মত পাওয়া যায়। মজার ব্যাপার হলো—মতামতের সংখ্যা ১৩টি হলেও সবগুলো মতই একটি আরেকটির দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং উপসংহারে অর্থ দাঁড়ায়—(১) হাদিসে উল্লেখিত গুনাহগুলোতে লিপ্ত থাকার সময় তা সম্পাদনকারীর ঈমান থাকে না। অতঃপর যখন সে এসব গুনাহের কাজ ছেড়ে দেয়, তখন আবার ঈমান ফিরে আসে। এটিই হাদিসের প্রকাশ্য অর্থ।

এছাড়াও এর বড় প্রমাণ হচ্ছে— আবু যার (রা.) বর্ণিত হাদিস— من قال لا إله إلا الله دخل الجنة وإن زنى وإن سرق ‘যে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ বলবে, সে চুরি ও ব্যভিচার করলেও জান্নাতে যাবে’ (বুখারি, মুসলিম, মেশকাত: ২৬, ঈমান অধ্যায়)-

উপরোক্ত আলোচনায় স্পষ্ট হলো যে, জিনা, চুরি, মদপান ও ছিনতাই—গুনাহগুলো ঈমানদারের জন্য কখনো শোভনীয় নয়। কারণ, ওসব গুনাহ করতে গেলে মুমিনের আসল সম্পদ ঈমানটাই তাকে ছেড়ে যায়, যদিও তা পরে ফিরে আসে। গুনাহগুলো থেকে নিজেকে হেফাজত করা প্রত্যেক মুসলমানের উচিত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কবিরাগুনাহমুক্ত জীবন দান করুন। আমিন।