ধর্ম ডেস্ক
১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫২ পিএম
সন্তান আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার। পবিত্র কোরআনে এটিকে ‘দুনিয়ার শোভা’ (সুরা কাহাফ: ৪৬) এবং পরীক্ষার মাধ্যম বলা হয়েছে। (সুরা আনফাল: ২৮)
সন্তানের প্রতি স্নেহ ও দয়া ঈমানের অংশ। সাহাবি আকরা ইবনে হাবিস (রা.) বলেন, ‘আমার দশটি সন্তান আছে, আমি তাদের কাউকেই কখনো চুমু দিইনি।’ রাসুল (স.) তখন বললেন, ‘যে দয়া করে না, আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন না।’ (সহিহ বুখারি: ৫৯৯৭)
ইসলামের দৃষ্টিতে সন্তান শুধু উপহার নয়, এক মহান আমানতও। কেয়ামতের দিন মা-বাবাকে এই আমানত সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৬৬৫৩)
আরও পড়ুন: কন্যাসন্তানের কারণে মা-বাবা যে মর্যাদা লাভ করবেন
সন্তানকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলা তাই ঈমানি দায়িত্ব। নবীজি (স.) সতর্ক করেছেন, ‘প্রত্যেক শিশুই ফিতরাতের ওপর জন্মগ্রহণ করে। পরে তার পিতা-মাতা তাকে ইহুদি, নাসারা বা অগ্নিপূজক বানায়।’ (সহিহ বুখারি: ১৩৫৮)
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘সন্তানের জন্য পিতার সর্বোত্তম উপহার হলো শিষ্টাচার শিক্ষা।’ (তিরমিজি: ১৯৫২) সুতরাং সন্তানের জন্য উত্তম বিনিয়োগ হলো তার ঈমান, চরিত্র ও ইসলামি জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা।
সুসন্তান পিতা-মাতার মৃত্যুর পরেও তাদের জন্য সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব বয়ে আনে। রাসুল (স.) বলেছেন, ‘মৃত্যুর পর তিনটি জিনিস মানুষকে উপকৃত করে: সদকায়ে জারিয়া, উপকারী জ্ঞান ও সেই সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে।’ (সহিহ মুসলিম: ১৬৩১)
আরও পড়ুন: সন্তানহারা বাবা-মাকে নবীজির সান্ত্বনা
অতএব, সন্তানপ্রেম ও স্নেহকে সুন্নাহ মোতাবেক পরিচালনা করে তাদেরকে আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার মানসে দায়িত্বশীলতার সাথে গড়ে তোলাই মুমিন মা-বাবার প্রধান কর্তব্য। যে সন্তানকে ঈমান ও চরিত্রে গড়ে তোলা হয়, সেই সন্তানই দুনিয়া-আখেরাত উভয়ের জন্য বরকতময় হয়।